• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০১৯, ০৫:২৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৬, ২০১৯, ০৫:২৮ পিএম

‘মিয়ানমারের টালবাহানায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে’

‘মিয়ানমারের টালবাহানায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে’

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকলেও মিয়ানমার তাদের ফেরত নিচ্ছে না। বুধাবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করা হয়েছে। সেই চুক্তিগুলোর একটিতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে- দুই বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, তারপরেও মিয়ানমার সরকার নানা টালবাহান সৃষ্টি করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অতি দ্রুত ফেরত পাঠাতে না পারলে আমাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রথম থেকেই একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বলপূর্বক বাস্তচ্যুত নাগিরকদের ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে তৈরি ঘরবাড়ি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছর আগস্টে মিয়ানমার সফর করেন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করার জন্য এরইমধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে দু’দেশের সম্মতিক্রমে দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে গত বছরের ২৫ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় বাস্তচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকরা স্বেচ্ছায় ফেরত যেতে রাজি হয়নি। ফলে ২৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি। আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করেছি। চুক্তির একটিতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে, দুই বছরে মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে; তথাপি মিয়ানমার সরকার নানা টালবাহানা সৃষ্টি করে এই প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, চুক্তিতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে, এ সকল বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার অধিবাসীদের নিরাপত্তা, সম্মান এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। চুক্তির আদর্শ ও মূল বাণী বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমার সরকারকেই উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে এবং আশ্বাস দিতে হবে কেননা মিয়ানমার সরকার নিজেরাই এ সমস্যা তৈরি করেছে। বিশ্ব জনমত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অব্যাহতভাবে আমাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ এ বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাদের এ বিষয়ে কাজ করতে দিচ্ছে না। মিয়ানমারের অসযোগিতা সত্ত্বেও আমরা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক দুটি পথই খোলা রেখেছি। বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এইচএস/এসজেড