• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৮:০৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৮:০৬ এএম

জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস ও নাশকতা ঠেকাতে

ফ্লাড লাইট ভেহিকেল পাচ্ছে ডিএমপি 

ফ্লাড লাইট ভেহিকেল পাচ্ছে ডিএমপি 

 জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস ঠেকাতে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে কেনা হচ্ছে অত্যাধুনিক যানবাহন।  বিশেষ করে জঙ্গি, নাশকতা ও সন্ত্রাস ঠেকানোসহ পুলিশের সেবার মান আরও আধুনিকায়নের জন্য কেনা হচ্ছে- ১০টি আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), ২০টি এসকর্ট ভেহিকেল এবং ৫টি ফ্লাড লাইট ভেহিকেলসহ মোট ৩৫টি গাড়ি। 

জানা গেছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও রাতে অভিযান পরিচালনা করতে অসুবিধা হতো পুলিশের। এজন্য অপেক্ষা করতে হতো দিনের আলো ফোটা পর্যন্ত। এ সমস্যা সমাধানের জন্যই ফ্লাড লাইট ভেহিকেল কেনা হচ্ছে। এতে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও সেবার মানও বৃদ্ধি পাবে

পুলিশের সাবেক আইজি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ, বিশেষ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কিছু নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তবে নিরাপত্তার সরঞ্জামের বেলায় কিছুটা পিছুটান ছিল। ডিএমপির সক্ষমতা বাড়ানো ও জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে সফলতার জন্য আরো সরঞ্জামাদি কেনার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।   

ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর থেকেই এ দেশে যেসব প্রকল্পে বিদেশিরা কর্মরত, বিশেষ করে জাইকার প্রকল্পগুলোর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সরকার।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প নিয়ে একনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে বিদেশিরা যেসব জায়গায় কাজ করে তাদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একনেকে পাস হয়েছে ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা’ নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করবে ৪০ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং জাপান সরকার অনুদান দেবে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা। প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০১৯ সালে জুলাইয়ের শেষ দিকে। শেষ হবে ২০২১ সালে জুনে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

পুলিশ জানায়, পটভূমি ও প্রকল্প গ্রহণের যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সীমিত জনবল এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অভিযানে সফলতা অর্জন করেছে, যা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রসংশিত হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। নিরাপত্তা, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অর্থায়নের উৎস এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের অনুপ্রেরণা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, বর্তমানে সন্ত্রাসের ধরণ পরিবর্তন হয়েছে, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিপজ্জনক।

বর্তমানে রাজধানীতে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়। প্রয়োজনীয় যানবাহন ও সরঞ্জামের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার গাড়ির মতো সুজজ্জিত যানবাহনের অভাবে অনেক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না।

এছাড়া, নিকট অতীতে দেখা গেছে, সন্ত্রাসী দলগুলো সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য রাতের বেলা সংঘবদ্ধ হয়। কিন্তু ডিএমপির ফ্লাড লাইট ভেহিকেলের মতো বিশেষ ধরনের যানবাহন না থাকায় তথ্য থাকা সত্ত্বেও রাতের বেলা অভিযান পরিচালনা না করে দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এর ফলে সন্ত্রাসীরা তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় পর্যাপ্ত সময় পায়। সার্বিকভাবে প্রয়োজনের তুলনায় বাংলাদেশ পুলিশের যানবাহনের সংখ্যা অপ্রতুল। এজন্য যানবাহন সরবরাহের মাধ্যমে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। 

এইচ এম/টিএফ