• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০১৯, ০৭:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৮, ২০১৯, ০৭:১৮ পিএম

নাড়ির টানে বাড়ির পানে মানুষ 

নাড়ির টানে বাড়ির পানে মানুষ 
ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন ঢাকায় কর্মব্যস্ত মানুষ- ছবি: কাশেম হারুন

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরের পর থেকেই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন ঢাকায় কর্মস্থলে থাকা মানুষগুলো। 

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও সদরঘাটে গিয়ে দেয়া যায় মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সবার মুখে একই কথা যে কোনো ভাবেই হোক বাড়ি যেতে চাই। মানুষের চোখে মুখে বাড়ি যাওয়ার আনন্দ।     

এদিকে যেসব যাত্রীদের বাস বা ট্রেনের অগ্রিক টিকিট কেনা আছে তাদের কোনো দুশ্চিন্তা না থাকলেও ট্রেন বা বাস টার্মিনালে ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের।অতিরিক্ত বিলম্বের কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্ভোগেও পড়তে হচ্ছে অনেককে।
 
কমলাপুরে অগ্রিম টিকিটে বাড়ি ফেরার দ্বিতীয় দিনে দেখা দিয়েছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়। সকাল থেকে কোনো ট্রেনই নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকা ছাড়তে পারেনি। প্রত্যেকটি ট্রেনই গড়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে হচ্ছে। কমরাপুর রেল স্টেশনের টিকিট কালেক্টর ইনচার্জ আবদুর রহিম জানান, প্রতি ঈদে  যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণেই শিডিউলে কিছুটা বিলম্ব হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। তিনি আরো জানান, রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে  ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ঢাকা ছড়েছে সকাল ৮টায়। অন্যদিকে চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে সকাল ১০টায়। আর শেরপুরের মহুয়া ট্রেনটি সকালে একঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে গেছে। 

ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন ঢাকায় কর্মব্যস্ত মানুষ- ছবি: কাশেম হারুন 

উল্লেখ্য আজ বৃহস্পতিবার কমলাপুর থেকে দেশে  বিভিন্ন গন্তব্যে স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৫৫টি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
 
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক দৈনিক জাগরণকে জানান, ঈদের সময়টাতে ট্রেনের শিডিউলে কিছুটা হেরফের হবেই। কারণ হিসেবে তিনি যুক্তি  দেখান প্রতিটি ট্রেনেরই যাত্রী থাকে বেশি। এই অতিরিক্ত যাত্রীদের উঠানামাতে সময় লাগে বেশি। এছাড়া প্রতিটি ট্রেন ফিরতেও একইভাবে সময় লাগে  বেশি। তাই ঈদের এই সময়টাতে কিছুটা বিলম্বকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় বলা যায় না। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বন্যার কারণে ট্রেনগুলোর গতি কমিয়ে চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
 
রাজধানীর গাবতলী কল্যাণপুর, শ্যামলী, সায়েদাবাদ কমলাপুর টিটি পাড়া এবং মহাখালী থেকে দেশের  বিভিন্ন গন্তব্যের বাস ছেড়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার এবং কাল শুক্রবার  ঘরমুখো যাত্রীদের  চাপ বেশ থাকবে বলে জানিয়েছেন বাসের টিকিট বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রথমে অগ্রিম টিকিট নেই বলা হলেও বেশি দাম দিলে এখনো কিছু টিকিট পাওয়া  যাচ্ছে । তবে প্রতি টিকিটে  দাম নেয়া হচ্ছে তিনগুন পর্যন্ত বেশি। 
অন্যদিকে সদরঘাটেও  দুপুরের  পর থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। দুপুরে সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ না ছাড়লেও যাত্রীরা কিন্তু দুপুরের পর থেকেই ভিড় করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা পরিবার নিয়ে আগে ভাগেই চলে আসছেন সদরঘাটে। 

Captionঈদে বাড়ি যাচ্ছেন ঢাকায় কর্মব্যস্ত মানুষ- ছবি: কাশেম হারুন 

বরিশালগামী যাত্রী লাইজু আক্তার দৈনিক জাগরণকে বলেন, লঞ্চ টার্মিনালে মানুষের প্রচন্ড  চাপ থাকবে জেনে আগেই আসছি। কেবিন নেয়া আছে। চিন্তা করছি  আবহাওয়া খারাপ।

এ দিকে মহাখালীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই  টার্মিনাল থেকে বাসের কোনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় না। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতেই এখান থেকে যাত্রীরা বাসের টিকিট কিনতে পারছেন। দুপুরের পর মহাখালীতেও যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। 

গাবতলীতে পরিবহন কর্মীরা জানান, মহাসড়কে যানজটের কারণে ঢাকামুখী সবগুলো বাসই গাবতলী  পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। এ কারণে কাউন্টারে জড়ো হওয়া যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। এছাড়া  দুপুরের দিকে দুই দফা বৃষ্টির কারণে অপেক্ষমান যাত্রীদের বেশ দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয়। এ সময় টার্মিনালমুখী যাত্রীদের অনেকেই বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে কাউন্টারে  পৌঁছান।
 
নগরী ঘুরে দেখা গেছে বৃহস্পতিবার রাজধানীর চারদিকে বাহির পথগুলোতে তীব্র যানজটে ঘরমুখো যাত্রীরা ছিল অসহায়। রাস্তায় যানজটের কারণে কারনে দুভোর্গে পড়েন ঘরমুখো যাত্রীরা। অন্যদিকে মাওয়া রাস্তাতে ছিল প্রচুর যানজট। নগরীর উত্তরে গাজীপুরের মাওনা এবং উত্তরাঞ্চলের রাস্তা আশুলিয়া বাইপাল ও চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর পর্যন্ত ছিল দীর্ঘ  যানজট। 

টিএইচ/বিএস