• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০১৯, ০৯:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৯, ২০১৯, ০৯:৫৩ পিএম

ডেঙ্গু পরিস্থিতি

অবশেষে মাঠে নেমেছেন নগর আ.লীগ নেতারা

অবশেষে মাঠে নেমেছেন নগর আ.লীগ নেতারা

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে অবশেষ মাঠে নেমেছেন রাজধানীর আওয়ামী লীগ নেতারা। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারা ডেঙ্গু নির্মূলে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এর আগে দলের পক্ষ থেকে যে ৩ দিনের কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল তাতে আওয়ামী লীগের নগর পর্যায়ের নেতাদের দৃশ্যমান সক্রিয়তা খুব একটা  ছিল না। 
     
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সারা দেশে যে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় তাতে প্রধানতম কর্মসূচি ছিল রাজধানীতে। কেন্দ্রের পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেয় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালিত হলেও ওয়ার্ড পর্যায়ে দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি পালন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকমান্ড। সেসময় ঢাকার দুই মেয়রের ওপর সব দোষ চাপিয়ে দিয়ে বসে থাকেন কাউন্সিলররাও। 

গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দলের ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে এক বিশেষ জরুরি সভা করে আওয়ামী লীগ। বার বার নির্দেশ দেয়ার পরও কেন ডেঙ্গু নির্মূলে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম নেয়া হচ্ছে না তা জানতে চাওয়া হয়। সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানতে চান- কতজন ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। এসময় হাত গুনে দেখা যায় ১৩ জন কাউন্সিলর হাত তুলেছেন। ঢাকা শহরের মোট ১০৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১৩ ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা মাঠে নামায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে ফটোসেশন করার জন্য এই অভিযান নয়। আমরা দেখতে চাই ঢাকা সিটির প্রত্যেক ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং নেত্রী এটা জানতে চেয়েছেন। নেত্রী জানতে চেয়েছেন, কয়টা ওয়ার্ডে নেত্রীর নির্দেশনা পালন হয়েছে। এসময় কাদের বলেন, ‘যারা করেননি। আমি চিহ্নিত করে লজ্জা দিতে চাই না। শুধু বলতে চাই- শেখ হাসিনার নির্দেশ মনে করতে হবে। যারা করেছেন তাদের ধন্যবাদ আর এই ধন্যবাদ অব্যাহত থাকবে। যারা করেননি নেত্রী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। প্রোগ্রাম না করলে কিন্তু অপ্রকাশিত থাকবে না।’
 
এ বিষয়ে রাজধানীর থানা পর্যায়ের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ওই বিশেষ জরুরি সভার পর থেকে অনেকেই দেখেছি কাজ করতে শুরু করেন। এর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (উত্তর ও দক্ষিণ) অনেক নেতাই এখন মাঠে নেমেছেন এবং নামছেন।    

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে তার সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরে গণভবনে পৌঁছেই ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে দলসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের পাড়া-মহল্লায় গিয়ে ‘ঘরে ঘরে’ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌঁছলে উপস্থিত নেতাদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটাকে আমাদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। আমরা সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। দলীয়ভাবে এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।  

সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে উপস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নির্দেশ দেন- তারা যেন নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় পাঠিয়ে দ্বারে দ্বারে গিয়ে কাজ করতে বলেন। 

নগর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মধ্যে মিরপুরের সংসদ সদস্য আসলামুল হক আসলামের নেতৃত্ব ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বেশ সরব ভূমিকায় রয়েছেন সেখানের ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের নেতারা। আদাবর থানা আওয়ামী লীগের নেতারাও বেশ কিছু কাজ করেছেন। এছাড়া ধানমণ্ডি আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। গত বুধবার সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ওই থানাধীন ৫নং ওয়ার্ডে কদমতলা-পূর্ব বাসাবো স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবক সর্বস্তরে সচেতনতার জন্য সভার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আওতাধীন নবাবপুর, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামপুর, শাহবাগ, বংশাল, যাত্রাবাড়ী, কতোয়ালী ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- মসজিদে মসজিদে ইমামের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, র‌্যালি, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম।  

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ জানান, বিভিন্ন থানা আওয়ামী লীগের নেতারা সমন্বয় করে কাজ করছেন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারাও এ নিয়ে কাজ করছেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা বাড়াচ্ছেন তারা। প্রয়োজনে কাউন্সিলরদের সঙ্গেও তারা সমন্বয় করে কাজ করছেন। 

আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, আদাবর থানা থেকে বলা হয়েছে, মসজিদে মসজিদে ঈমামের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩টি প্রোগ্রাম করা হয়েছে। আবার আদাবরে কিছু বাসিন্দা নিজ উদ্যোগে মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে। 
 
ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম জানান, ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আবু হোসেন নেতৃত্বে আমরা ডেঙ্গু নির্মূলে অনেকগুলো কাজ করেছি। এর মধ্যে র‌্যালিসহ জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। এছাড়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।  

উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এখন মানুষকে সচেতন করছি। মানুষকে বোঝাচ্ছি যে, ঘরে যেন পানি না জমে থাকে। এমন অনেকভাবেই সচেতন করছি।   
         
এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন