নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এবার ঈদযাত্রায় লঞ্চের যাত্রীসেবার ক্ষেত্রে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেনি যাত্রীরা। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু নতুন পদক্ষেপ নেয়ায় এবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে দীর্ঘ যানজট নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ফেরিগুলো ফ্রিকুয়েন্টলি চলেছে। ২০টি ফেরির কোনোটি কোথাও থেমে থাকেনি। বিশ্রামের বিষয়টাও যাত্রীসেবায় উৎসর্গ করেছে। ৫টি ফেরি শুধু যাত্রী পারাপারের জন্য নির্ধারিত ছিল। লাখ লাখ মানুষ ফেরিতে পার হয়েছে। কোরবানির গরুও ফেরিতে পারাপার করা হয়েছে। ঈদের আগের দিন ফেরিতে পরিবহন সংকট ছিল। ফেরি বসে ছিল কিন্তু বাস-ট্রাক ছিল না।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা- সবাই সিরিয়াল মেনে চলেছে। এটার ওপর আমরা খুব স্ট্রিকট (কঠোর) ছিলাম। ওভারটেক করে বা কোনো রকম সুবিধা নিয়ে ফেরিতে উঠে যাওয়া- এসব ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ খুব তৎপর ছিল। রাস্তায় যে যানজট থাকে সেটা তো আমাদের বিষয় না। ফেরিঘাটে ওভারটেকের বিষয়টা আমরা দেখভাল করেছি। কোনো অনিয়ম দৃষ্টির মধ্যে আসেনি। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এডিস মশা, ডেঙ্গুজ্বর- সব মিলে দেশে একটা অস্থিরতা আছে। এর মধ্যেই আমি মানুষের মধ্যে আনন্দের কোনো কমতি দেখিনি। সড়ক বা রেলপথে ২০ বা ৩০ ঘণ্টায় যারা এলাকায় গেছেন আমি তাদের মধ্যেও ঈদের আনন্দ পেয়েছি। এবার কোরবানির গরু ৯৯ শতাংশ দেশি ছিল। ব্যবসায়ী এবং যারা কোরবানি দিয়েছেন উভয়ই সন্তুষ্ট ছিল।

তিনি আরও বলেন, চামড়া শিল্পে যদি কোনো রকমের ব্যাঘাত ঘটে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় ভবিষতে পদক্ষেপ নেবে। সব জায়গায় সিন্ডিকেট তৈরি করার প্রবণতা থাকলে তো হবে না। সরকার সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করছে। দেশে কোনো ধরনের অস্থিরতা নেই। এটাকে অস্বাভাবিক করার একটা চেষ্টা চলছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারা চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলছে এটা দেখেন। এরা কারা। দেশে তো দেশবিরোধী একটা বিরাট চক্র বিরাজমান। তারা নানাভাবে সরকারকে হেয় করার জন্য কাজ করছে। তাদের বিষয়ে দেশবাসী ভালো করেই জানেন।

চামড়া রফতানিতে বাণিজ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, চামড়া রফতানি হলে এ সংকট থাকবে না। বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য সংকটে আছে। এ সংকট দেশের মানুষের উপরে চাপিয়ে দিতে চায়। এডিস মশা নিয়েও রাজনীতি, পরিবহন ব্যবস্থা নিয়েও রাজনীতি। একটা শহর থেকে প্রায় দুই কোটি মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে, সেখানে কিছুটা দুর্বলতা থাকতে পারে। এটা নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই। বরং মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই রাজনীতি। এটা না করে সমালোচনা করলাম, এটা দায়িত্ব পালন করা হলো না। যদি হজের কথা চিন্তা করি- প্রত্যেক বছর সারা বিশ্ব থেকে ৪০ লাখ মানুষ হজে যাচ্ছে। এত সুব্যবস্থা থাকার পরও সংকট আছে। সেখানে বাংলাদেশে একটা শহর থেকে ২ কোটি মানুষ বেরিয়ে যাচ্ছে, এ মানুষগুলোকে ম্যানেজমেন্ট করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। তারপরও সরকার চেষ্টা চালিয়ে সফল হয়েছে। 

টিএইচ/ এফসি