• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০১৯, ১০:১২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৬, ২০১৯, ১০:১২ এএম

বঙ্গবন্ধু হত্যা 

১০ বছরেও পলাতক চার খুনির সন্ধান পায়নি ইন্টারপোল

১০ বছরেও পলাতক চার খুনির সন্ধান পায়নি ইন্টারপোল
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ৪ ঘাতকের অবস্থান  খুঁজে পাচ্ছে না ইন্টাপোল। ফাসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ ঘাতকের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছিলো। সেই রেড নোটিশ এখনো বিদ্যমান রয়েছে। গত ১০ বছর অতিবাহত হলেও হত্যাকারীদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি।যার ফলে দেশে এনে এ ঘাতকদের ফাসির রায় কার্যকরও সম্ভব হচ্ছে না।
 
এবিষয়ে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, আমরা অনেকদিন ধরে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে আনার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এর মধ্যে দুজনের অবস্থান আমরা জানতে পেরেছি। এ দুজনকে আনার প্রক্রিয়া গতিশীল করা হচ্ছে।পলাতক নূর চৌধুরী কানাডায় এবং এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বলে নিশ্চিত রয়েছে ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। বাকি ৪ জনের অবস্থান শনাক্তে কাজ চলছে বলে জানান আইনমন্ত্রী ।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারস ফোরামের একাধিক নেতা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ঘাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ছয় আসামির মধ্যে চারজনের অবস্থান দশ বছরেও শনাক্ত হয়নি। বাকি দুজনের অবস্থান বিদেশে শনাক্ত হলেও তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে চলমান আলোচনায় এখনো কোনো সুফল আসেনি।

১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে। দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।এই হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে ২০১০ সালে। বাকিদের একজন মারা গেছেন এবং ছয়জন পলাতক রয়েছেন। পলাতক ঘাতকরা হলেন- আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা আছে।
এদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় এবং এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বলে নিশ্চিত রয়েছে ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। বাকিরা কোথায় আছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। সম্ভাব্য একাধিক দেশে তাদের অবস্থানের কথা বলা হচ্ছে, তার সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও এনসিবি নিয়মিত যোগাযোগ করে চলেছে।
 
এদিকে ঘাতক এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও এম রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান নিশ্চিত হলেও তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এ মুহূর্তে নতুন কোনো তথ্য নেই। সম্প্রতি বলা হয়েছিল, রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় গেছে। কানাডার কাছে জানতে চাওয়া হলে তাদের দেশে রাশেদ নেই বলে জানিয়ে দেয়। ওই দুইজনকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে জোরালোভাবে যোগাযোগ চলছে।
দণ্ডিত বাকি চার ঘাতকের মধ্যে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ভারতে রয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। আব্দুর রশিদ ও শরিফুল হক ডালিম কখনো পাকিস্তান কখনো লিবিয়ায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। আর ঘাতক আব্দুল মাজেদ রয়েছেন সেনেগালে।

অপরদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (ল্যান্সার) ফাঁসি কার্যকর হয় ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি। আজিজ পাশা ২০০১ সালের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়েতে মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। তারপর  ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেওয়া হয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে, মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

এইচএম/বিএস