• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০১৯, ০৬:১৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৬, ২০১৯, ০৮:৪৩ পিএম

নাম মুছে ফেলার প্রক্রিয়া জিয়াই শুরু করেছে : শেখ হাসিনা

নাম মুছে ফেলার প্রক্রিয়া জিয়াই শুরু করেছে : শেখ হাসিনা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : টিভি থেকে নেয়া

নাম মুছে ফেলার প্রক্রিয়া জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জিয়া অবৈধভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। এরপর একটা নীতিমালা করল- যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন নেবে সেখানে কোনো নেতার নাম সেখানে রাখতে পারবে না, অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর নাম ‘শেখ মুজিব’ যেন না থাকে। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার জন্য জিয়াউর রহমানই সেই নীতিমালা করে। 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভার আয়োজন করা হয়।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া ও এরশাদ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী। এটা অনেক দিন পর আমাদের আদালত থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাদের আর রাষ্ট্রপতি বলা যায় না। 

জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের মন্ত্রী করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংবিধান লংঘন করে জিয়া ক্ষমতায় দখল করেছিল। ’৭৫ সালের পর থেকে এদেশে ১৯টি ক্যু হয়েছে। জিয়াউর রহমান কীভাবে খন্দকার মোশতাকের এত বিশ্বস্ত হলো যে, তাকেই সেনাপ্রধান করলো। ফারুক-রশিদ বিবিসিতে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিল সেই সাক্ষাৎকার থেকেই আপনারা জানতে পারেন যে, তারা যে জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং জিয়ার কাছ থেকে যে ইশারা পেয়েছে। সেটা তো তারা নিজেরাই বলে গেছে। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ে খাদ্যসংকট সৃষ্টি করে, দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সেসময়ে যে খাদ্য সচিব ছিল জিয়াউর রহমান তাকে পরে মন্ত্রী করেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য স্যার টমাস উইলিয়াম বাংলাদেশে আসতে চাইলেও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাকে ভিসা দেয়নি।  

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান একজন মেজর ছিল, তাকে প্রমোশন দিয়ে দিয়ে মেজর জেনারেল করা হয়েছিল। মাসে একবার করে হলেও সে আমাদের বাড়িতে আসত। কখনও একা, কখনও খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়ে। কারণ, খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করার উছিলায় উপরে আসতে পারত, আর আমাদের লবিতে দুটো মোড়া পেতে বসত। ঘন ঘন তার যাতায়াত ছিল। ডালিম (বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী), তার বউ-শ্বাশুড়ি দিন-রাত আমাদের বাসায়, ঘোরাঘুরি করত। ওসমানী, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাকে যখন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক করা হলো, তখন তার এডিসি হিসেবে কামালকে নিয়োগ দেয়া হয়। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কের আরেক এডিসি ছিল মেজর নূর (বঙ্গবন্ধুর আরেক হত্যাকারী)। আর এরাই এই হত্যাকাণ্ডটা চালালো। 

তিনি বলেন, মোশতাক মন্ত্রী ছিল, পরবর্তীতে আপনারা অনেককেই দেখেছেন, যারা বিএনপিতে যোগ দিয়েছে, অনেক বড় বড় কথা, অনেক মিথ্যা কথা ওরা বক্তৃতায় শোনায়- তারা কী ছিল, তারা কি এ সকল ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিল না? তারা ভেবেছিল, এভাবেই বোধায় ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে। কিন্তু সেই ক্ষমতা টেকেনি। 

আবেগতাড়িত কণ্ঠে ’৭৫ সালের ১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে আমি গিয়েছিলাম স্বামীর কর্মস্থলে। দুটি বাচ্চা আর রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে। আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। বাঁচার যন্ত্রণাটা মৃত্যুর থেকেও অনেক বেশি। ৬ বছর দেশে আসতে পারিনি। অন্য দেশে রিফিউজি হয়ে আশ্রয় নিয়ে থাকতে হয়েছে। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, মোহাম্মদ নাসিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান।  
 
এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন