• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২১, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা জোট সরকারের মদদে’

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা জোট সরকারের মদদে’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা তৎকালীন বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের মদদ ছাড়া হতে পারে না। এমন অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২১ আগস্ট) বিকালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের এক বিশেষ আলোচনা সভায়  তিনি এ কথা বলেন। 

গ্রেনেড হামলার ঘটনা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ওই দিন মিছিলের জন্য মুক্তাঙ্গনের অনুমতি আমরা চাই, কিন্তু সেই অনুমতি আমাদের দেয়নি। অনুমতি দেয়নি বলে আমরা পোস্টার করে, মাইকিং করে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে ব্যবস্থা নিই। সেখানে মাইক লাগানোও হয়ে যায়। রাত্রি ১২টার দিকে এসে তখন একটা অনুমতির চিঠি পাঠানো হলো আওয়ামী লীগ অফিসে। রাত ১২টায় কে চিঠিটা তুলবে, কে দেখবে, আর কে ব্যবস্থা নিবে? এটা ছিল তাদের বলার জন্য যে, আমরা তো অনুমতি দিয়েছি, এ জন্যই তারা রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই অনুমতি পত্র পাঠিয়েছিল। আমরা যেখানে ব্যবস্থা নিয়েছি, সেখানে সমাবেশ করেছি। আল্লাহ বাঁচাবে বলেই বোধ হয় এটা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন ওখানে মিটিং করি, সব সময় আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা, নেতাকর্মীরা পুলিশের সাথে সাথে প্রত্যেকটা বিল্ডিংয়ে ছাদে থাকে পাহারা দেয়ার জন্য, সেই দিন কাউকে উঠতে দেয়নি, আশপাশে কোনো কর্মী নেই। রমনা হোটেল থেকে শুরু করে যতগুলি, বিল্ডিং আছে, একটা বিল্ডিংয়েও আমাদের কোনো নেতাকর্মীকে উঠতে দেয়নি। তাদের কোথাও দাঁড়াতে দেয়নি। আমরা মিটিং করতে গেলেই শত শত পুলিশ দিয়ে বাধা দেয়া হতো। কাউকে আসতে দেওয়া হয় না। সেই দিন কিন্তু ওই ধরনের তৎপরতা ছিল না। 
  
ওই ঘটনার পরে সেদিন পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার পর পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যখন ছুটে গেছেন আহতদের সাহায্য করতে। তখন একটা বীভৎস দৃশ্য তারা তৈরি করল। সেটা আমি পরে শুনেছি। সেখানে যারাই যাচ্ছে, তাদেরকে পুলিশ লাঠিচার্জ করছে আর সেই সাথে সাথে টিয়ার গ্যাস।’ তিনি বলেন, ‘কোথাও যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে পুলিশের দায়িত্ব থাকে- সঙ্গে সঙ্গে আহতদের সাহায্য করা। এ ঘটনাটা কারা করলো তাদের বিষয়ে দেখা, দোষীদের ধরা, যারা সেখানে নির্যাতিত তাদের সাহায্য করা। এখানে ঘটলো উল্টো ঘটনা। সেখান থেকে আক্রমণকারীরা যাতে বেরিয়ে যেতে পারে, সেই সুযোগটা সৃষ্টি করে করার জন্যই এ ধরনের ঘটনাটি ঘটিয়েছিল।’  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর পর জেল খানায় একটা গ্রেনেড পাওয়া গেল। জেলখানায় যে গ্রেডেটটা পাওয়া গেল, কোন এক পত্রিকা আবার খুব ডায়াগ্রাম মেখে বললো, জেলখানার পাশের কোনো বাড়ি থেকে সেই গ্রেনেড ছুঁড়ে মারা হয়েছে। কিন্তু জেলখানা এলাকায় এমন কোনো বাড়ি নেই, যেখানে গ্রেনেড ছুঁড়ে মারলে সেখানে গিয়ে পড়বে। এটা কখনও সম্ভব না। তার মানে হচ্ছে, এরা যাদেরকে দিয়ে আক্রমণ করিয়েছিল, সেই ক্রিমিনাল কিছু তারা জেলখানা থেকেও সংগ্রহ করে এনেছিল। এ ছাড়া অজ্ঞানামা যে দুই জন মারা গিয়েছিল তাদের খবর আর কেউ নেয়নি, লাশও কেউ নেয়নি। এটা যে সরকারের পক্ষ থেকে করা, এর পরের দিন সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এনে জায়গাটা ধোয়া শুরু করে। আলামত নষ্ট করা হয়।   
   
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সভায় বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজুলল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন