• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০১৯, ০৭:৫৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৩, ২০১৯, ০৭:৫৯ পিএম

১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ভয়াবহতা শুনলেন কূটনীতিকেরা

১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ভয়াবহতা শুনলেন কূটনীতিকেরা

বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্ক হয়ে থাকা ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ভয়াবহতার কথা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের জানালো আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা চলে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের উপস্থিতিতে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয় উপ-কমিটি আয়োজিত এক সেমিনারে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। 

‘বাংলাদেশের উপর ১৫ আগস্টের প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ। আলোচনা শেষে তারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি স্মারকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন-  আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক  ড. শাম্মী আহমদসহ ওই উপ-কমিটির অন্যান্য সদস্য। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও জাপানসহ ৩০ দেশের কূটনীতিক সেমিনারে অংশ নেন।

আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে চলতে না দেয়ায় আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। যদি তার দেখানো পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারত, তাহলে হয়ত এতদিনে আমরা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতাম।

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানো বাংলাদেশে কতটা প্রভাব ফেলেছে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের জানা উচিত বাংলাদেশের জন্য তিনি কী পরিকল্পনা করে গেছেন। কৃষিনির্ভর এই দেশে কৃষকদের স্বার্থে কাজ করেছেন তিনি। ১৯৭২ সালে দেশে ফেরার পর থেকে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি ও শিক্ষাখাতে। বাংলাদেশে যুদ্ধপরবর্তী সময় কৃষিজমির খাজনা হ্রাস এবং ১৬ হাজারের বেশি যুদ্ধবিধ্বস্ত স্কুল পুনর্নির্মাণ ও সরকারের অধিভুক্ত করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান বিশ্বের জন্য বিস্ময়। কেননা যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন হওয়ার পর তার সংবিধান তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ১১ বছর। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সংবিধান তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ বছর। পাকিস্তানেরও প্রথম সংবিধান তৈরি করতে সময় লেগেছিল ৯ বছর। সেখানে মাত্র ৯ মাসে আমরা আমাদের সংবিধান তৈরি করতে পেরেছি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারণে।

আলোচনা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে কথা বলছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে বঙ্গবন্ধুর একজন খুনিকে হস্তান্তর করেছে। আশা করছি বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীর আগে যুক্তরাষ্ট্র এই আত্মস্বীকৃত খুনিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, কানাডায় বঙ্গবন্ধু আত্মস্বীকৃত খুনিদের একজন রয়েছেন। কানাডা সরকারের সঙ্গে আমরা কথাও বলেছি। তাকে সেখানে আশ্রয় দেয়া হয়নি। কিন্তু কানাডা মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না। এ কারণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের তারা কোনো দেশের কাছে হস্তান্তর করে না।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কানাডার ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগের বিষয় স্মরণ করিয়ে বলেন, সম্প্রতি টেক্সাসের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যে পাঠিয়েছে কানাডা। কেননা ওয়াশিংটন মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না। কিন্তু ওয়াশিংটনে পাঠানোর পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাকে টেক্সাসে পাঠায় যেখানে ওই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বঙ্গবন্ধুর অপর খুনিকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আইন ও শাসনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি রয়েছে, তাতে আমরা আশাবাদী এই খুনিকে দেশটি ফেরত পাঠাবে।

ফরাসউদ্দিন বলেন, পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি ঘাতকেরা। তারা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতাদের একে একে হত্যা করে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলে আরেকটি পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি। কিন্তু তারা সফল হয়নি। যেই বাংলাদেশকে তারা হতে দিতে চায়নি বলে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিল, সেই বাংলাদেশ আজ গড়ে উঠছে তার কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে। ২০১৭ সালে মাথাপিছু আয়ে আমরা ছাড়িয়ে গেছি পাকিস্তানকে। এ সবই সম্ভব হয়েছে জাতির পিতার দেখানো পথে চলে। 

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন