• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯, ০৬:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯, ০৬:৫৫ পিএম

পরিচয় গোপন করে রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা এখন রাহী খুশি

পরিচয় গোপন করে রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা এখন রাহী খুশি
রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা এখন রাহী খুশি - ছবি জাগরণ

ইন্টারনেটে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা জার্মানির ডয়চে ভেলে কর্তৃক প্রচারিত দেড় মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা আকতার ওরফে রাহী খুশি উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে একটি এনজিওর কর্মী হিসেবে তার স্বদেশি রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন।

ভিডিওটিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯২ সালে রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা আকতার ওরফে রাহী খুশির পরিবার একইভাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল। সেখানে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সন্তানেরা বৈধভাবে বাংলাদেশের কোনো স্কুলে পড়তে পারে না।

রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে স্বদেশি রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন  -  ছবি : জাগরণ

তাই রোহিঙ্গা পরিচয় লুকিয়ে এবং ঘুষ দিয়ে কক্সবাজারের একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন খুশি। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোহিঙ্গা পরিচয় লুকিয়ে এবং ঘুষ দিয়ে ভর্তি হওয়া সেই স্কুলটি হলো কক্সবাজার শহরের বৈল্যাপাড়ার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি।

জানা গেছে, খুশি কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি থেকে এসএসসি ও কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। কক্সবাজারের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এলএলবি অনার্স পড়ছেন।

এই রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা আকতার ওরফে রাহী খুশি বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সংগঠন বন্ধুসভার জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক। এছাড়া ওমেন লার্নিংথ সেন্টার, মার্কি ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার সরকারি কলেজের স্কাউটসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে তিনি সম্পৃক্ত।

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ডয়চে ভেলে খুশির দেড় মিনিটের ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার করলে তার রোহিঙ্গা পরিচয় ফাঁস হয়ে যায়। তার সহপাঠীরাও রীতিমতো বিস্মিত খুশি একজন রোহিঙ্গা এবং সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।

ফেসবুকে সুজন দত্ত লিখেছেন, ‘আমি আজ জানতে পেরেছি যে খুশি একজন রোহিঙ্গা। এত দিন জানতাম না বিষয়টি।’
তাহামিদুল মুনতাসির লিখেছেন, ‘ও মাই গড! এই মেয়েটা রোহিঙ্গা!! সে বিবিসি মিডিয়া নামে একটা এনজিওতে চাকরি করে সম্ভবত। কদিন আগে ছিনতাইকারী মেরে পেপার হেডলাইন হয়েছিল।’ আরিফ শিকদার বাপ্পী লিখেছেন, ‘তথ্যবহুল আলোচিত এটি, আশা করি, এর গুণে প্রশংসিত না হয়ে এখনই প্রতিবাদ করা প্রয়োজন। কক্সবাজারসহ দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের ভর্তি বাণিজ্যে লিপ্ত না হয়ে দেশের স্বার্থে কঠোর হওয়া দরকার।’ কক্সবাজারের সাংবাদিক ইমরুল কায়েস চৌধুরী ফেসবুকে লেখেন, পরিচয় গোপন করে নৌ স্কাউট, স্কুলশিক্ষক ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য হলো রোহিঙ্গা তরুণী।’

কক্সবাজারের কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের তরুণী রহিমা আকতার। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইলিয়াস আর মায়ের নাম মিনু আরা। রহিমার জন্ম থেকে শুরু করে বেড়ে ওঠা সবকিছুই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। কিন্তু গত দুই বছরে বদলে গেছে সবকিছু। গোপন করেছেন নিজের পরিচয়। বানিয়েছেন নকল জন্মসনদ। রহিমা আক্তার থেকে হয়ে গেছেন রাহি আক্তার খুশি। নেতৃত্ব দিচ্ছেন কক্সবাজার নৌ স্কাউটের, হয়েছেন কক্সবাজার পৌর প্রিপারেটরি স্কুলের আইটি প্রশিক্ষক।

এনআই

আরও পড়ুন