• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯, ০৭:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯, ০৭:১৬ পিএম

ইন্টারকন্টিনেন্টালের টেন্ডার প্রক্রিয়া নিরীক্ষা করবে সংসদীয় কমিটি

ইন্টারকন্টিনেন্টালের টেন্ডার প্রক্রিয়া নিরীক্ষা করবে সংসদীয় কমিটি

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৭১৪ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম নিরীক্ষা করে দেখার প্রস্তাব করা হয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন কমিটির সদস্য তানভীর ইমাম। 

সম্প্রতি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ষষ্ঠ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কাজী ফিরোজ রশীদ, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক এবং সৈয়দা রুবিনা আক্তার আলোচনায় অংশ নেন।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৭১৪ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতে হয়েছে কি না-তা তদন্ত করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কমিটির সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার।

পরে কমিটি টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়েছে কি না-তা তদন্তপূর্বক একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন স্থায়ী কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করে।

জানা যায়, রাজধানীতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংস্কার কাজ ২০১৫ সালে শুরু হয়। সংস্কার কাজ ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে তা গত বছর আগস্টে শেষ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর এর উদ্বোধন করেন। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু করে হোটেলটি। 

এদিকে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি পাঁচতারা হোটেল ও নাইটক্লাবে বিয়ার ও হার্ড ড্রিংকসে মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্যও বলেছেন কমিটির সভাপতি। তবে অ্যালকোহলের ওপর কর হ্রাসের আগে সামাজিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন এক সদস্য।

এ বিষয়ে বৈঠকে কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতেও অসংখ্য ছাতা ও বেঞ্চ বিছানো আছে, যা পর্যটকদের ভাড়া করে ব্যবহার করতে হয়। এগুলো বিচ কমিটি নিয়ন্ত্রণ করে বিধায় তাদের দ্বারা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পর্যটকরা যাতে হয়রানি মুক্ত ও বিনা ভাড়ায় ছাতা ও বেঞ্চ ব্যবহার করতে পারে- সে জন্য সমুদ্র সৈকতকে সিডিএ-এর অধীনে নিয়ে কক্সবাজারে অবস্থিত পাঁচতারা ও চারতারা হোটেলগুলোকে এ দায়িত্ব প্রদানের সুপারিশ করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি পাঁচতারা হোটেল ও নাইটক্লাবে বিয়ার ও হার্ড ড্রিংকসের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার সুপারিশ করেন।

এরপর কমিটির সভাপতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ দেশের পাঁচতারা হোটেল ও নাইট ক্লাবসমূহে বিয়ার ও হার্ড ড্রিংকসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। এ সময় কমিটির আরেক সদস্য তানভীর ইমাম পাঁচতারা, চারতারা ও তিনতারা হোটেলসমূহে অ্যালকোহলের ওপর কর হ্রাস করার পূর্বে সামাজিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ জানান।

বৈঠকে অসম চুক্তির মাধ্যমে ইজিপ্ট এয়ারের দুটি বিমান আনার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। 

কমিটির সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার অসম চুক্তির মাধ্যমে ইজিপ্টএয়ারের দুটি বিমান আনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করেন। এছাড়া বিভিন্ন ট্রাভেলিং এজেন্সি কর্তৃক ভুয়া টিকেট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বিমানের যে সকল কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন, সে বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন সৈয়দা রুবিনা আক্তার।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, ত্রুটিপূর্ণ ইজিপ্টএয়ারের দুটি বিমান অসম চুক্তির মাধ্যমে লিজ নেয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্র কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং এ কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে কি না -সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া দরকার।

তিনি ইজিপ্টএয়ারের ২টি বিমান লিজের ব্যাপারে দশম জাতীয় সংসদের গঠিত সাব কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন বর্তমান সাব কমিটিকে সরবরাহ করে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায় ইজিপ্টএয়ার থেকে লিজ নেয়া নষ্ট দুটি উড়োজাহাজের পেছনে প্রতিবছর ১২০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। মিশরের ইজিপ্টএয়ার থেকে ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের জন্য দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর ড্রাই লিজ নেয় বিমান। লিজ নেয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই উড়োজাহাজ দুটি নষ্ট হয়ে যায়।

এইচএস/টিএফ
 

আরও পড়ুন