• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯, ০৩:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯, ০৫:১৬ পিএম

খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০টি ভবনের কাজ সমাপ্ত 

খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০টি ভবনের কাজ সমাপ্ত 
খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প

১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উদ্বাস্তুদের জন্য কক্সবাজারে নির্মিণাধীন দেশের সবচেয় বড় খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৩৯টি ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের মধ্যে ১০টি ভবনের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ১০টি ভবনের কাজ চলমান, যা সহসাই সমাপ্ত হবে। প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করার জন্য ১১৭৯ কোটি টাকার ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহফুজ আলম।

সম্প্রতি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানান। 

বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যম এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। 

মাহফুজ আলম বলেন, অনুমোদিত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী ৪৪৪৮টি পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নামে গ্রহণপূর্বক এককভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. মোতাহার হোসেন বলেন, এই বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য দেশের অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সেনাবাহিনী সব কাজ যেভাবে সুনামের সঙ্গে করছে তা এখানেও যেন তা অক্ষুণ্ন থাকে। ব্যয়বহুল এই নির্মাণ কাজের জন্য কাজের মান ঠিক রেখে পানি, বিদ্যুৎ, রাস্তাসহ প্রকল্পের সব কাজ সেনাবাহিনীকে সম্পন্ন করার অনুরোধ রাখেন। তবে তিনি বিশাল এই প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন।

কমিটির আরেক সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, সেনাবাহিনী কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে বিশাল এই প্রকল্প সুনামের সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। তবে এই কাজের কিছু অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়েছে। পানির ব্যবস্থা, রাস্তা, বিদ্যুৎ ইত্যাদি নিশ্চিত না করে ভবন তৈরি করা হচ্ছে। যা আদৌ সেখানে বসবাস উপযোগী করা যাবে কিনা সন্দেহ। স্কুল, বিদ্যুৎ, পানি, রাস্তা নির্মাণ এগুলো আলাদা আলাদা মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয়েছে। এতে করে বোঝা যায়- এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ ভাল হবে না। উপস্থাপনায় যেটা বোঝা গেল- পানির ব্যবস্থা ১০ কি.মি. দূরে থেকে আনার ব্যবস্থা হচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে। এ রকম বিভিন্ন কাজ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে দিয়ে না করিয়ে সব কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় ২০টি ভবন হয়ে গেছে, কিন্তু অন্যান্য সুবিধা কবে হবে জানা নেই। এক সময় দেখা যাবে নির্মিত ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের ব্যবস্থা করাসহ প্রকল্পের সব কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করানোর অনুরোধ জানান।

এরপর কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া এমন একটি বিশাল প্রকল্পের কাজ সুনামের সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধ জানান। তিনি সদস্যদের সাথে একমত পোষণ করে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার জন্য প্রকল্প পরিচালককে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের সব কাজ সেনাবাহিনীকে দিয়ে করাতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, সেনাবাহিনী ভাল কাজ করে। তাই এই বিশাল প্রকল্পটিও সেনাবাহিনী অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সম্পন্ন করতে পারবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

জানা যায়, ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উদ্বাস্তু হয় কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। যাদের মধ্যে অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয় নেয় কক্সবাজার বিমানবন্দর সংলগ্ন নাজিরারটেক, কুতুবদিয়া পাড়া ও সমিতি পাড়ায়। কিন্তু বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে আশেপাশের সরকারি খাস জমিতে বসবাসরত উদ্বাস্তু বাসিন্দাদের স্থানাস্তরের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।

২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে বাঁকখালী নদীর পাশে প্রায় ২শ' ৫৪ একর জমিতে নেয়া হয় জেলার খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প। 

এইচএস/বিএস