• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ০৫:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ০৫:০০ পিএম

নতুন ভবন নির্মাণে যেসব নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী  

নতুন ভবন নির্মাণে যেসব নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী  
শেখ হাসিনা - ফাইল ছবি

নতুন বহুতল স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আবাসিক ভবন নির্মাণের সময় টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে উন্মুক্ত জায়গা, প্রাকৃতিক বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, বারান্দা এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যেন থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বর্জ্য ও পানি ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোয় নজর দিতে কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যত্রতত্র বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে প্রয়োজনে আইন প্রণয়নের কথাও বলেছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন এবং বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত কয়েকটি প্রকল্পের ধারণা প্রস্তাব দেখার পর এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় প্রধানমন্ত্রী খেলার মাঠ, জলাধার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনগণ ও রাস্তায় গাড়ির চাপ, আবাসিক ভবনে ন্যাচারাল ভেন্টিলেশনসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে সুপরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন প্রকল্প নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে সুপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করতে সাধারণ দেশবাসীর প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোর তথ্য উপস্থাপন করেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজি গোলাম নাসির ও সহকারী স্থপতি সায়মা বিনতে আলম। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির অভ্যন্তরে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-এ) প্রকল্পের পরিবর্তিত মাস্টারপ্ল্যান, সচিবালয়ে নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনে মন্ত্রিপরিষদ সভা আয়োজনের সংস্থান রাখা, শেরেবাংলা নগরে স্থপতি লুই আই কান প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের ৪৩ একর জমিতে জরাজীর্ণ দ্বিতল ভবন অপসারণ করে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ধারণাগত প্রস্তাবনা উপস্থাপন এবং হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় মাল্টিপারপাস সহযোগী ভবন নির্মাণ প্রকল্পের পরিকল্পনা উপস্থাপনা করা হয়।

সভায় এখন থেকে গ্যাস ও পানির লাইনের পাশাপাশি বিদ্যুৎ লাইনকেও ভূগর্ভে স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণের প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের একটা প্রবণতা- খালি জায়গা পেলে দালান তোলা, এটা একটা অসুস্থতার মতো হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কেউ রাস্তা দিতে চায় না, মাঠও দিতে চায় না, বিল্ডিং করে ফেলে। বহুতল ভবন বা যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে সেখানকার রাস্তার অবস্থা, সড়কে গাড়ির চাপ, ধারণক্ষমতা ও জনসমাগমের বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোথাও কোনো স্থাপনা করতে গেলে দেখতে হবে ওই এলাকার রাস্তায় কতটা গাড়ি চলে, নতুন স্থাপনা নির্মাণের ফলে নতুন কতটা ট্র্যাফিক যোগ হবে। ওই রাস্তায় ট্র্যাফিক কতটা নিতে পারবে সেটা দেখতে হবে।

সারাদেশে যত্রতত্র জমি ব্যবহার করতে পারবে না, এজন্য একটা আইন করার প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। আবাসিক ভবন নির্মাণের প্রাকৃতিক বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, বারান্দা এবং অগ্নিনির্বাপণ, খোলা জায়গা রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসি সবসময় ব্যবহার করা ঠিক না। এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো না। খোলা জায়গা, ন্যাচারাল বাতাস থাকে, সিলিং ফ্যানের ব্যবস্থা থাকতে হবে, ন্যাচারাল ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে, রান্নাঘর থেকে ময়লা নিচে ছুঁড়ে ফেলেন। গুলশানের মতো জায়গাতেও দেখা যায় দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে এক মানুষ সমান ময়লার স্তূপ জমে আছে।

সচিবালয়ের যেসব মন্ত্রণালয়ে লোকজন বেশি আসে সেসব মন্ত্রণালয়গুলোকে ভবনের নিচের দিকে রাখতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সচিবালয়ে যেসব মন্ত্রণালয়ে মানুষ বেশি আসে তাদের অফিস ভবনের নিচের দিকে রাখা, হাঁটাপথের মধ্যে রাখা দরকার। যেমন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রচুর লোক আসে, তাদের দিয়ে রেখেছে ওপরে। সারাক্ষণ মানুষ আসে, লিফ্‌টেও ভিড়। ভবনের সব জায়গায় টয়লেট না করে একপাশে নির্দিষ্ট জায়গায় টয়লেটগুলো করার নির্দেশনা দেন তিনি।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন