• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ১০:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ১০:০২ পিএম

না বুঝে সংসদে ‘না’ ভোট, প্রতিবাদ সাবেরের

না বুঝে সংসদে ‘না’ ভোট, প্রতিবাদ সাবেরের
সাবের হোসেন চৌধুরী - ফাইল ছবি

না বুঝেই ‘না’ ভোট দেয়ার ঘটনা ঘটেছে সংসদে। বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব প্রত্যাহারের বিষয়টি বুঝতে না পেরে প্রথমে ‘না’ ভোট দেন সরকারি দলের এমপিরা। অথচ তাদের ‘হ্যাঁ’ ভোট দেয়ার কথা ছিল। আর বিষয়টি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বুঝতে পেরে তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে আবার ভোটে দেন। দ্বিতীয় দফায় বেশির ভাগ সংসদ সদস্য ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন। আর এর মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর একটি বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব পাস হতে হতে হলো না।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে এই ঘটনা ঘটে।

তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রচলিত অ্যাড–ভেলোরাম (স্তরভিত্তিক মূল্যের শতকরা হার) পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ করার দাবি জানিয়ে বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব এনেছিলেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। সংশোধনী দিয়ে তার এই প্রস্তাবে সমর্থন জানান আরও ৯ জন এমপি।

সাবের হোসেন চৌধুরী তার প্রস্তাবের পক্ষে বলেন, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করেন। প্রায় ১৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। প্রায় ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ২০১৭–১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে বেশি।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশে তামাকের যে কর–কাঠামো তা অত্যন্ত জটিল, পুরনো ও অকার্যকর। বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশে এভাবে করারোপ করা হয়। অন্যদিকে ফিলিপাইন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশির ভাগ দেশে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি চালু আছে। এটি করা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে।

জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান আইনে তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের সুযোগ নেই। চলমান বাজেটে স্তরভিত্তিক শুল্কারোপ করা হয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এবং গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ক্রমান্বয়ে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতি চালু করার বিষয়টি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো একদিন এটি হবে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণত সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা তাদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরী তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে রাজি হননি। তখন নিয়ম অনুযায়ী তার প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের জন্য কণ্ঠভোটে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংসদের অভিমত এই যে, সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রচলিত অ্যাড–ভেলোরাম পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ করা হউক।’ স্পিকার ভোটে বলেন, “সাবের হোসেন চৌধুরীর এই প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হোক, যারা এর পক্ষে আছেন তারা ‘হ্যাঁ’ বলুন।” খুব কমসংখ্যক সদস্য ‘হ্যাঁ’ বলেন। স্পিকার বলেন, “যারা এর বিপক্ষে আছেন তারা ‘না’ বলুন।” বেশিরভাগ সদস্য ‘না’ বলেন। অর্থাৎ বেশিরভাগ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়ে দেন। এসময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে হাসতে দেখা যায়।

পরে তিনি বলেন, তিনি আবার সব সদস্যের মনোযোগ আকর্ষণ করছেন। তিনি প্রস্তাবটি আবার পড়ে শোনান এবং দ্বিতীয় দফা ভোটে দেন। দ্বিতীয় দফায় ‘হ্যাঁ’ ভোট জয়ী হয়। এতে সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যাত হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী ও রাশেদ খান মেনন প্রতিবাদ করেন। এর জবাবে স্পিকার তার অধিকারবলে ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুসরণ করেই এ কাজ করেছেন বলে জানান। 

এইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন