• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৮:১১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৮:৩৭ পিএম

‘ক্যাসিনোর টাকা কোন কোন নেতার কাছে গেছে তা বের হচ্ছে’   

‘ক্যাসিনোর টাকা কোন কোন নেতার কাছে গেছে তা বের হচ্ছে’   
বক্তব্য রাখছেন ওবায়দুল কাদের - ছবি : জাগরণ

অবৈধভাবে চালানো ক্যাসিনোর টাকা কোন কোন নেতার কাছে যেত তা-ও খুঁজে বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, অন্যায়ভাবে অর্জিত অর্থ কোন কোন নেতার কাছে যেত তা বের করা হচ্ছে। অনেক বিএনপি নেতার কাছেও এই ক্যাসিনোর টাকা গেছে, এই খবর গণমাধ্যমে বেরিয়ে আসছে। এই প্রশ্নেরও জবাব দিতে হবে।  

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে তার স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলা বিভাগের ৭৩ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মধ্যে এই বৃত্তি প্রদান করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি।

শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেবেন না, শেখ হাসিনার অ্যাকশান শুরু হয়ে গেছে- উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনুপ্রবেশকারীরাও এখানে আছে। খুঁজে খুঁজে অপকর্মকারী, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের বের করা হচ্ছে। অন্যায়ভাবে অর্জিত অর্থ কোন কোন নেতার কাছে যেত তা বের করা হচ্ছে। অনেক বিএনপি নেতার কাছেও এই ক্যাসিনোর টাকা গেছে, এই খবর গণমাধ্যমে বেরিয়ে আসছে। এই প্রশ্নেরও জবাব দিতে হবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ঘর থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছেন। সারা দেশের মানুষ এপ্রিশিয়েট (প্রশংসা) করছে। আর বিএনপি আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ, আত্মস্বীকৃত সন্ত্রাসী দল। এটা তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দেয়ার মধ্য দিয়েই প্রমাণিত।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দুদকের মামলায় জড়ানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাওয়ার পর তিনি বলে দিয়েছেন ‘আমি দুদকের ওকালতি করি না।’ তবে আওয়ামী লীগ ধোয়া তুলসী পাতা না, এখানে কেউ অপকর্ম, চাঁদাবজি, গডফাদারি করে না- এটা বলছি না। অপকর্ম, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে যে বার্তা দিয়েছেন বিএনপি আজকে এর বিরূপ মন্তব্য করছে। শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেয়া তাদের উচিত ছিল।

বিএনপি উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের আমলে বিএনপির কোনো অপরাধের জন্য শাস্তি পেতে হয়নি। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আজকে জেলে। অনেক নেতা, এমপি, মন্ত্রী দুদকের মামলায় হাজিরা দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের মেয়র জেলে, এমপি-মন্ত্রীরা আদালতে হাজিরা দিচ্ছে।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা শুরু করেছিল হাওয়া ভবন সংস্কৃতি। এই হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতির আখড়া, হাওয়া ভবন খাওয়া ভবনে পরিণত হয়েছে। এই হাওয়া ভবন ছিল লুটপাটের খাওয়া ভবন। এই বিএনপি নেতাদের মুখে দুর্নীতি বিরুদ্ধে কথা বলা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া আর কিছুই না।

ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের দায়িত্ব পরিবর্তন হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমি এখানে দেখতে পাচ্ছি। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই রাজনীতিকে বঙ্গবন্ধুর চিরবিজয়ী আদর্শে ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্র লীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হলে তোমাদেরকে খারাপ খবরের শিরোনাম হওয়া যাবে না। ছাত্রলীগ ভালো খবরের শিরোনাম হবে- এটাই আমরা আশা করি।   

অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ভিন্ন আদর্শের ভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও বঙ্গবন্ধু কন্যার সুসম্পর্ক ছিল। আমরা বেবি মওদুদের কথা অনেকেই জানি, শেখ হাসিনা ও বেবি একইসঙ্গে পড়তেন, কিন্তু পৃথক ছাত্র সংগঠনে ছিলেন। তাদের মধ্যে সেই সময়ে যে সৌহার্দ্য সম্পর্ক ছিল সেটা বেবির মৃত্যু পর্যন্ত টিকে ছিল। এটা এখনকার ছাত্রনেতাদের জন্য উদাহরণ হতে পারে।

শেখ হাসিনার বাংলা বিভাগে ভর্তির স্মৃতিচারণ করে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ক্যান্টনমেন্টে বন্দি, তখন শেখ হাসিনা বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই তার প্রতি আমাদের অত্যন্ত সহানুভূতি ছিল। তখনকার বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী। ভর্তি হতে এসে শেখ হাসিনা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডোরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আগরতলা মামলায় তার বাবা জেলে থাকায় তাকে অন্য কোনো বিভাগ ভর্তি নিচ্ছিল না। তখন মুনির চৌধুরী সাহেব আমাকে বললেন, শেখ মুজিবুরের কন্যা শেখ হাসিনাকে আমাদের এখানে নিয়ে আসো। ও ভর্তি হতে এসেছে, আমরা বাংলা বিভাগে তাকে ভর্তি করবো।               

ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এ এফ ফখরুল ইসলাম মুন্সীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ভীষ্মদেব চৌধুরী, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।       

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন