• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯, ০৬:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯, ০৬:৫৮ পিএম

তথ্য চাইলেও তথ্য দেয় না অনেক সংস্থা-অভিযোগ দুদক চেয়ারম্যানের

তথ্য চাইলেও তথ্য দেয় না অনেক সংস্থা-অভিযোগ দুদক চেয়ারম্যানের
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ

‘‘হোমওয়ার্কের মাধ্যমে কর্মকৌশল ঠিক না করে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপরাধীদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত তথ্যাদি পাওয়া কঠিন। তাই অবশ্যই তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আগেই যথাযথ হোমওয়ার্ক করে প্রশ্নমালা তৈরি করতে হবে এবং নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসা করতে হবে’’ 

.................................

দুর্নীতি সম্পর্কিত অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তের জন্য অনেক সংস্থার কাছে তথ্য চাইলেও অনেক সংস্থা তা সরবরাহ করে না বলে অভিযোগ তুলেছেন খোদ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএনওডিসির আয়োজনে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কমিশনের উপ-পরিচালক থেকে তদুর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নলেজ শেয়ারিং সেশনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা শুধু চিঠি দিয়ে বসে থাকবেন- এটা হবে না। আপনাদের ফরোয়ার্ড ডায়েরি অনুসরণ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আপনাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সঙ্গে কোনও সংস্থা যদি তথ্য সরবরাহ না করে তাহলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমরা অনেক কিছুই করতে পারি কিন্তু করি না- এটা হতে পারে না। এর সমাপ্তি হওয়া উচিত। ডাটা বা তথ্যের সঠিক বিশ্লেষণ হচ্ছে অপরাধীদের অপরাধ চিহ্নিত করার প্রাথমিক সোপান। এ পর্যায়েই প্রাসঙ্গিক ডাটা সংগ্রহ করতে হয় এবং অপ্রাসঙ্গিক ডাটা বাদ দিতে হয়। তদন্তে সফলতার জন্য আরেকটি বড় কাজ হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ। হোমওয়ার্কের মাধ্যমে কর্মকৌশল ঠিক না করে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপরাধীদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত তথ্যাদি পাওয়া কঠিন। তাই অবশ্যই তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আগেই যথাযথ হোমওয়ার্ক করে প্রশ্নমালা তৈরি করতে হবে এবং নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসা করতে হবে।

প্রশিক্ষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, জনগণের অর্থে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই অর্থের সঠিক ব্যবহারের জন্যই কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কী শিখছেন, কীভাবে নিজ কর্মে এর প্রয়োগ ঘটাবেন এবং কত সময়ের তা দৃশ্যমান হবে, তার স্পষ্ট রূপরেখা প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ শেষেই তা প্রকাশ করতে হবে। প্রত্যেককে অন্তত একটি লার্নিংপয়েন্ট নিজ কর্মে প্রয়োগের ব্যবস্থা এবং এর সম্ভাব্য ফলাফল প্রশিক্ষণ শেষে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সচিবের কাছে দাখিল করতে হবে। আর সচিব ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবেন।

তিনি বলেন, কমিশন এরই মধ্যে অন্যান্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রয়োজনে আইনি প্রক্রিয়ায় আরও যৌথ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সম্পদ সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাটা স্প্রেড শিট প্রদর্শন করা সমীচীন। স্প্রেডশিটের মাধ্যমে সব তথ্য পরিমাণগত বিশ্লেষণ করে লেখচিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হলে, অবৈধ সম্পদের সঠিক চিত্র আমাদের কাছে দৃশ্যমান হবে। তদন্তের গুণগত মানোন্নয়নে এসবের কোনও বিকল্প নেই। কমিশন প্রতিটি মামলার নিখুঁত এবং আন্তর্জাতিকমানের তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা প্রত্যাশা করে। সঠিকভাবে তদন্ত ও প্রসিকিউশন হলে কমিশনের মামলায় শতভাগ সাজা নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান বলেন, পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় আইনের সর্বোচ্চ নিখুঁত প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

কর্মশালায় দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত, মহাপরিচালক (তদন্ত) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) এএনএম আল ফিরোজ, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ জহির রায়হান, মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও আইসিটি) একেএম সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন