• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯, ১০:০৫ পিএম

সবার প্রশ্ন সম্রাট এখন কোথায়

সবার প্রশ্ন সম্রাট এখন কোথায়
যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট

বি শে ষ  প্র তি বে দ ন

..................

● রাজনীতি শুরু ১৯৯০ সালে

● আওয়ামী লীগের বড় বড় কর্মসূচিতে পরিচিত মুখ তিনি

● নিজ এলাকায় তার পরিচয় ‘দানবীর’ হিসেবে

● আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ কোটি চাঁদা দাবি

● টাকার বস্তা নিয়ে তিনি জুয়া খেলতে যান সিঙ্গাপুর

● সিন্ডি লি নামে চীনা বান্ধবী রয়েছে সম্রাটের

● চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চাইছেন, পালাতে নয়

সরকারের চলমান দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জুয়া-ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত নাম ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তিনি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যুবলীগের চেয়ারম্যান সংগঠনটির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। কার্যত চেয়ারম্যানের পর সংগঠনের সকল পদই সাংগঠনিকভাবে কোনও ক্ষমতা রাখে না। এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদেরও সাংগঠনিকভাবে তেমন কোনও ক্ষমতা নেই। কিন্তু সম্রাট কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তর্ভূক্ত একটি ইউনিটের সভাপতি হলেও যুবলীগে চেয়ারম্যানের পর সবচেয়ে ক্ষমতাবান হিসেবে ধরা হয়। চলমান অভিযানে তার সহযোগীরা গ্রেফতার হলেও তিনি এখনও রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর তাতেই সবার মনে প্রশ্ন উদয় হয়েছে কোথায় আছেন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। গ্রেফতার আতঙ্কে তিনি কী আত্মগোপনে চলে গেছেন, নাকি প্রভাবশালী নেতার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। 

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের পৈত্রিক নিবাস ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব সাহেবনগর গ্রামে। বাবা ফায়েজ উদ্দীন চৌধুরী। দুভাই ও দুইবোনের মধ্যে সবার বড় সম্রাট।নিজের এলাকায় আর্থিক সহযোগিতা; বিশেষ করে স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসার ‘বড় দাতা’ হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তার।

যুবলীগ জানা যায়, রাজনীতিতে আসার আগে সম্রাট রাজধানীর কাকরাইল এলাকার একটি হোটেলে কিছুদিন ম্যানেজারের কাজও করেছেন। ১৯৯০ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন সম্রাট। তখন অবিভক্ত ঢাকা ছাত্রলীগের একজন নেতা ছিলেন তিনি। সে সময় সারাদেশে সামরিক স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন চলছিল। সম্রাট রাজধানীর রমনা অঞ্চলে আন্দোলনের সংগঠকের দায়িত্বে ছিলেন। এ কারণে তখন তাকে জেলও খাটতে হয়। 

১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর প্রথম তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে  ক্ষমতায় আসে বিএনপি সরকার। সে আমলে সম্রাটের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও হয়। এরপর ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যুবলীগের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। তখন ঢাকা মহানগর যুবলীগের সভাপতি ছিলেন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। সম্রাট ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক। মূলত আজকের যুবলীগের আলোচিত সম্রাট তখন থেকেই সৃষ্টি হতে থাকে। যদিও তখন শাওন চৌধুরীই যুবলীগের সবচেয়ে আলোচিত নেতা ছিলেন। কিন্তু জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নিজের গাড়িতে নিজেরই বডিগার্ড ইব্রাহিম খলিল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শাওন চৌধুরীকে যুবলীগের রাজনীতিতে বেকায়দায় ফেলে। ইব্রাহিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার কারণে শাওন চৌধুরী লাইমলাইটের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। শাওনের প্রস্থানের পথ ধরে যুবলীগের ক্ষমতার রাজনীতিতে কার্যত উত্থান ঘটে সম্রাটের। যদিও ২০১০ সালে শাওন চৌধুরী দ্বীপ জেলা ভোলা-৩ আসন থেকে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শাওন চৌধুরী বর্তমান জাতীয় সংসদেও ওই আসনের সংসদ সদস্য।     

ওয়ান ইলেভেনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকেই রাজনৈতিকভাবে আরও ক্ষমতাবান হতে থাকেন সম্রাট। দলীয়ভাবে পদোন্নতিও হয় তার। শাওন চৌধুরীর প্রস্থানের পর মহানগর দক্ষিণের সভাপতির পদ পান সম্রাট। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয় নি। দিন দিন ক্ষমতাবান হতে থাকেন তিনি। আওয়ামী লীগের বড় বড় সব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পরিচিত মুখ হিসেবে উপস্থিত হতে থাকেন সম্রাট। দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক শোডাউনও করতে দেখা গেছে তাকে।

সম্রাটকে দেশের শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক ও সম্রাটের নেতৃত্বাধীন ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগকে দেশের শ্রেষ্ঠ সেরা সাংগঠনিক ইউনিট ঘোষণা করেন যুবলীগ বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।

যুবলীগের রাজনীতিতে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট দিন দিন যত ক্ষমতাশালী হতে থাকেন পাশাপাশি তাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমানতালে চলে আসছে নানান কাহিনী, গুঞ্জন, আলোচনা-সমালোচনা। যদিও বিষয়গুলো দেশের গণমাধ্যমে তেমন কোনও প্রচার না থাকায় এসব মূলত গুঞ্জন হিসেবেই এতদিন ঘুরপাক খাচ্ছিল। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের সদরদফতর ভবন নির্মাণে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে গেল বছরই প্রথমবারের মত গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন সম্রাট। মানবকল্যাণে নিবেদিত প্রাচীন এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সদর দফতর নির্মাণের কাজ চলছে কাকরাইলেই আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম সড়কে। আর সম্রাটের কার্যালয়ও এ ভবনটি পাশের সড়কে। তার চাঁদা দাবির কারণে ভবনটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ, এ ধরনের একটি সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। এ সংবাদ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা খুবই নাখোশ হন। তিনি বলেন, মানবকল্যাণে নিবেদিত যে প্রতিষ্ঠানে আমি (প্রধানমন্ত্রী) ও আমার বোন রেহানা বিভিন্ন সময় সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকি, সেখানে চাঁদাবাজি কিছুতেই মেনে নেব না। মূলত এ ঘটনার পর থেকেই সম্রাটের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হতে থাকে। এরপর রাজধানীজুড়ে জুয়া, ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অভিযোগ দিন দিন তা বাড়তেই থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে যুবলীগের বেশ কয়েক নেতার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়া-ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে  চরম ক্ষুব্ধ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এসব বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এসব অনৈতিক বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানের কথাও নেতাদের জানিয়ে দেন তিনি। তিনি দল ও দলের অঙ্গ সংগঠনে কোনও ধরনের অনৈতিক কাজ বরদাশত না করারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। কার্যত প্রধানমন্ত্রীর এ হুঁশিয়ারির পর নড়ে চড়ে বসে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। 

চলতি মাসের ১৯ তারিখ ঢাকায় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। তাকে আটকের সময় বিপুল পরিমাণ টাকা, অবৈধ অস্ত্র ও বিদেশি মদ, ইয়াবাসহ অন্য মাদকও উদ্ধার করে র‌্যাব। চার মামলায় তাকে রিমান্ডে নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ব্যবসায় ও কর্মকাণ্ডে খালেদের ‘গুরু’ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে সম্রাটের।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রের বরাতে জানা যায়, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজধানীর ৩টি ক্যাসিনো। এগুলো হচ্ছে- মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব, ব্রাদার্স ক্লাব ও বনানী এলাকার গোল্ডেন ঢাকা। মতিঝিল এলাকার ফুটবল ক্লাব আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব, সোনালী অতীত, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ ছিল সম্রাটের হাতে। সেখান থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করেন  তার সহযোগীরা। এ কাজ চালিয়ে যেতে প্রভাবশালীদের তিনি নিয়মিত টাকাও দিতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। 

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, সম্রাট একজন পেশাদার জুয়াড়ি এবং এ কারণে সিঙ্গাপুর, সাবেক পর্তুগিজ উপনিবেশ দ্বীপরাজ্য চীনা ম্যাকাওয়ে যাতায়াত আছে তার। মাসের এক-তৃতীয়াংশ সময় জুয়া খেলতে সিঙ্গাপুর, ম্যাকাওয়ে কাটান তিনি।  আলোচিত এ সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো- টাকার বস্তা নিয়ে তিনি জুয়া খেলতে যান সিঙ্গাপুর, ম্যাকাওয়ে। মাসে অন্তত ১০ দিন সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলেন। এটি তার নেশা। সেখানে সম্রাট ভিআইপি জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত। প্রথম সারির জুয়াড়ি হওয়ায় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টে তাকে রিসিভ করার বিশেষ ব্যবস্থাও আছে। এয়ারপোর্ট থেকে মেরিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনো পর্যন্ত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বিলাসবহুল  লিমুজিনযোগে। সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলতে গেলে সম্রাটের নিয়মিত সঙ্গী হন যুবলীগ দক্ষিণের নেতা আরমানুল হক আরমান, মোমিনুল হক সাঈদ ওরফে সাঈদ কমিশনার, সম্রাটের ভাই বাদল ও জুয়াড়ি খোরশেদ আলম।

সূত্রের বরাতে বলা হয়, সিঙ্গাপুরে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের এক চীনা বান্ধবী রয়েছে। তার নাম সিন্ডি লি। সিঙ্গাপুর গেলে তার সঙ্গে বিশেষ সময় কাটান সম্রাট। ২০১৮ সালের শেষদিকে সিঙ্গাপুরে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সিন্ডি লির জন্মদিনে বড় আকারের একটি পার্টির আয়োজন করেন সম্রাট। জাকজমকপূর্ণ ওই পার্টিতে যোগ দিতে সিঙ্গাপুরে যান সম্রাটের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক ওরফে সাঈদ কমিশনার, শেখ সোহেল ও সাবেক এক প্রতিমন্ত্রীর এপিএস মিজানুর রহমান।

জানা যায়, সম্রাটের আর্থিক লেনদেনগুলো করে থাকেন আরমান। ঠিকাদার হিসেবেও আরমানের পরিচিতি রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দিতে সম্রাট তাকে সহযোগিতা করেন বলেও জানা গেছে।

সম্রাটের বর্তমান অবস্থান

গত কয়েকদিন ধরেই ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের অবস্থান নিয়ে চলছে রহস্য। ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকেই তিনি তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন, যা সর্বত্র আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও অস্বীকার করছিলো না, তিনি কার্যালয়ে নেই। এও জানা যাচ্ছিল, সম্রাট দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন। আবার এখন ‘গুজব’ আকারে জানা যাচ্ছে, গত পরশু রাতে সম্রাট ‘ছদ্মবেশে’ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গেছেন। সম্রাট কার্যালয়েই আছেন, না বেরিয়ে গেছেন, গ্রেফতার এড়াতে তিনি কার্যালয় কেনো বসে থাকবেন, প্রশ্ন-রহস্যের উত্তর মিলছে না।

তবে বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, বর্তমানে সম্রাট তার কার্যালয়ে নেই। কিন্তু গত মঙ্গলবার দিনের কোনও এক সময় তিনি ঘন্টা তিনেকের জন্য তার এ কার্যালয়ে এসেছিলেন। সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তিনি আবার বেরিয়ে গেছেন। বর্তমানে নিরাপদ স্থানে তিনি রয়েছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে প্রথম ৫ দিন সম্রাট তার কার্যালয়ে ছিলেন। তার নিরাপত্তারক্ষী, বিশ্বস্ত কর্মী  ও সমর্থকদের দিয়ে অফিস ভবনটি ঘিরে রেখেছিলেন। অফিসের বাইরে মূল গেটের সামনে কমপক্ষে ৫০/৬০টি দ্রুতগতির মোটর সাইকেল দিয়েও ব্যারিকেড সৃষ্টি করে রেখেছিলেন। কিন্তু গত দুদিন থেকে সে অবস্থা আর দেখা যাচ্ছে না।

যুবলীগের এক কর্মী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সম্রাটের শরীরে আগে থেকেই পেসমেকার বসানো আছে। আরেকটি পেসমেকার বসাতে তার সামনের মাসের ১৬ তারিখে বিদেশে যাওয়া র্নিধারিত ছিল। তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চাইছেন, পালাতে নয়। তাকে দেশত্যাগের অনুমতি দিতে সম্রাট ভাই বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের রাজি করানোর চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।

বহুল আলোচিত-সমালোচিত সম্রাটের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জানতে ২১ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সম্রাটের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে তাকেও ছাড় দেয়া হবে না। অবশ্যই তাকে গ্রেফতার করবে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের ধরা হচ্ছে। যার বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ পাব, তার বিরুদ্ধেই আমরা অ্যাকশনে যাব। কাউকে আমরা ছাড় দিচ্ছি না।

ছবি ● ফাইল ছবি

টিএস/এসএমএম

আরও পড়ুন