• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০১৯, ০৬:১৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৭, ২০১৯, ০৬:১৭ পিএম

৭ নভেম্বর কোনো বিপ্লব হয়নি : মাহজাবিন খালেদ

৭ নভেম্বর কোনো বিপ্লব হয়নি : মাহজাবিন খালেদ
সংবাদ সম্মেলনে মাহজাবিন খালেদ -ছবি : জাগরণ

৭ নভেম্বর একটি প্রাণঘাতী সেনা অভুত্থান সংঘঠিত হয়েছিল, সেদিন কোনো বিপ্লব হয়নি বলে দাবি করেছেন মুক্তিযুদ্ধের ২নং সেক্টর কমান্ডার ও কে-ফোর্সের অধিনায়ক খালেদ মোশররফের জ্যেষ্ঠ কন্যা মাহজাবিন খালেদ।

তিনি বলেন, যারা সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন, যারা সংবিধান ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ চেয়েছে; তাদেরই ওই দিন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ডের খুনীদের বিচার দাবি করেছেন।
  
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যার বিচারের দাবি’তে এক সংবাদ সম্মেলন ও অভিমত প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের রক্তাক্ত ঘটনা নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে খালেদ মোশাররফ ট্রাস্ট। এতে সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা আবু ওসমান চৌধুরীর কন্যা নাসিমা ওসমান, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ এবং  অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)’র সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহজাবিন খালেদ বলেন, দেশের সঙ্কটময় মুহূর্তে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর একটি সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে খন্দকার মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন খালেদ মোশররফ। ৩ নভেম্বরের পর সেনানিবাসের ভেতরে ওই টালামাটাল দিনগুলিতে একটি গুলি ছুড়তে হয়নি তাকে। একজন মানুষকেও আঘাত করা হয়নি। খালেদ মোশররফ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের শায়েস্তা করে সেনাবাহিনীকে একটি চেইন অব কমান্ডে ফিরিয়ে আনাই তার মূল লক্ষ্য ছিল। 

মাহজাবিন জানান, ৬ নভেম্বর রাত ১২টার পর ঢাকা সেনানিবাস থেকে যখন তথাকথিত সিপাহী বিপ্লবের সূচনা হয়। তখন খালেদ মোশাররফ ও অন্যরা বঙ্গভবনে ছিলেন। গোলাগুলির সংবাদ শুনে খালেদ মোশাররফ কর্নেল হুদার মাধ্যমে ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক নওয়াজেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার ইউনিটে যান। ভোরের দিকে জিয়াউর রহমান খালেদ মোশাররফের অবস্থান জানার পর তার সঙ্গে কথা বলেন এবং দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এরপরই কিছুসংখ্যক সৈনিক নওয়াজেশের অফিসের দরজা ভেঙ্গে তিনজনকেই বাইরে নিয়ে এসে গুলি করে হত্যা করে। তাই জানতে বাকি নেই কার নিদের্শে খালেদ মোশাররফ ও তার সহকর্মীদের নির্মমভাবে হত্য করে। 

তিনি আরও বলেন, খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বেই গৃহবন্দী করা হয়েছিল তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। যিনি কি না মোশতাক চক্রের আস্থাভাজন হিসাবে পরিচিতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন বলেই জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করেছিলেন মোশতাক।

খালেদ মোশারফের কন্যা বলেন, আমরা চাই পৃথিবীর আর দশজনের মত পিতৃহত্যার বিচারসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার বিচার। চাই সত্য উদঘাটন হোক। দেশ ও জাতিকে সঠিক তথ্য উপাত্ত জানাতে এবং খুনীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে-এটাই প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, খালেদ মোশাররফের ক্ষমতার মোহ ছিল- তথ্য নির্ভর এমন দাবি করতে পারবে না। তিনি বিনা রক্তপাতে একটি সফল অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু ক্ষমতা দখলের আগ্রহ দেখাননি। এটি ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদ। আর রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ সায়েমকে। 

টিএস/একেএস