• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৯:৩৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৯:৩৩ এএম

চলতি বছরে ৬টি রেল দুর্ঘটনায় ৪০ জনের প্রাণহানি 

চলতি বছরে ৬টি রেল দুর্ঘটনায় ৪০ জনের প্রাণহানি 

চলতি বছরে সারাদেশে ৬টি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সকল দুর্ঘটনায় প্রায় ৪০ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছে ৪ শতাধিক ব্যক্তি। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অঙ্গহানি হয়েছে। অঙ্গহানি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন অনেকেই। আর্থিক সঙ্কটের কারণে কেউ কেউ উন্নত চিকিসা নিতে পারছেন না। তাদের একজন ছন্দু মিয়া। চলতি বছরের ২৩ জুন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করেন হবিগঞ্জের বিরামচরের এই বাসিন্দা। তিনি শায়েস্তাগঞ্জ পুরানবাজারে ডিমের ব্যবসা করতেন। ওইদিন তিনি উপবন এক্সপ্রেসে করে সিলেটে বোনের বাসায় যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। ওই দিন কুলাউড়ার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে খালে ছিটকে পড়ে। সেখানে মারা যান ৬ যাত্রী। আহত হন ছন্দু মিয়াসহ প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি।

চলতি বছরের ১৬ মার্চ টাঙ্গাইলে রেলক্রসিংয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে রেল ধাক্কা দিলে দুজন নিহত হন। এ দুর্ঘটনার সময় আহত হন দুজন। ওই দিন দুপুর দুইটার দিকে সদর উপজেলার রসুলপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

৭ জুলাই গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশনে ধোঁয়া-মোছার কাজ সেরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস রেলের সঙ্গে ড্রামট্রাকের সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। ঘটনার দিন ভোর চারটার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম স্টেশন সংলগ্ন দক্ষিণখান এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় রেলে কোনও যাত্রী ছিল না।

১৫ জুলাই একটি উন্মুক্ত রেলক্রসিংয়ে রেলের ধাক্কায় বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী নিহত হন। সে ঘটনায় আহত হন আরও ৪ জন। ওইদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাইক্রোবাসটি উল্লাপাড়া পৌরসভার গুচ্ছগ্রাম এলাকা (কনে বাড়ি) থেকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়াকান্দি পাড়ায় যাচ্ছিল। উল্লাপাড়ার সলপ রেলস্টেশনের রেলক্রসিং এলাকায় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

রংপুরের কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশনে ৩ অক্টোবর রেল দুর্ঘটনায় এক যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন ১৫ জন। ঘটনার দিন বিকেল পৌনে চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীবাহী একটি রেলের ইঞ্জিন একদিক থেকে ঘুরে অন্যদিকে লাগানোর সময় দাঁড়ানো রেলকে ধাক্কা দিলে দুটি বগি ভেঙে যায়। এতে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ স্টেশনে দুই রেলের সংঘর্ষে ১৬ যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন শতাধিক যাত্রী।

১২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ভোররাতের পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শতাধিক যাত্রী আহত হন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস এক নম্বর লাইনে ঢুকছিল। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথাকে আউটারে থাকার সিগন্যাল দেয়া হয়। চালক সিগন্যাল অমান্য করে মূল লাইনে ঢুকে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

রেল বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশের মানুষ ভ্রমণের জন্য রেলকে সবচেয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক মাধ্যম মনে করা হলেও এখন ঘন ঘন রেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ ও শঙ্কা বাড়ছে।

তারা বলছেন, সড়কের পাশাপাশি রেলপথে দুর্ঘটনার সংখ্যা কম নয়। দেশে প্রায়ই ছোট-বড় রেল দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। কখনও লাইনচ্যুত হয়ে বা দুই রেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ ধরনের দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। নিহত ও আহত হচ্ছেন শত শত মানুষ।

দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮৯ সালের ১৫ জানুয়ারি গাজীপুরের টঙ্গীতে। ওই দুর্ঘটনায় ১৭০জন নিহত হন। আহত হন ৪০০ যাত্রী।

ছবি ● সংগৃহীত

এইচএম/এসএমএম

আরও পড়ুন