• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ০৮:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ০৮:০৮ পিএম

শাহবাগ থানা

সাত মাসেও উদ্ধার হয়নি খোয়া যাওয়া অস্ত্র-গুলি

সাত মাসেও উদ্ধার হয়নি খোয়া যাওয়া অস্ত্র-গুলি

৭ মাসেও উদ্ধার করা যায়নি শাহবাগ থানা থেকে খোয়া যাওয়া ৭ দশমিক ৬২ চায়না মডেলের পিস্তল ও ১৬টি গুলি। এটা উদ্ধার করতে পুলিশ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়েও সুফল পাচ্ছে না।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে শাহবাগ থানার ওসি (অপারেশন) মাহবুবুর রহমান দৈনিক জাগরণকে বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত ৫মে দুপুরের ডিউটি শেষে শাহবাগ থানায় ফেরেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হিমাংশু সাহা। থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার বিশ্রামকক্ষে পোশাক পরিবর্তন করে ঘণ্টাখানেক ঘুমানোর পর যান শৌচাগারে। ব্যবহৃত একটি পিস্তল আর কয়েকটি গুলি রাখা ছিল বিশ্রামকক্ষের বিছানার ওপরে। মিনিট পাঁচেক পর যখন ফিরে আসেন ততক্ষণে চুরি হয়ে যায় ৭ দশমিক ৬২ চায়না মডেলের পিস্তল ও ১৬টি গুলি। ঘটনার সময় বিকাল ৪টা বেজে ২০ মিনিট।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এক যুবককে সন্দেহ করলেও তার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিকল্পনা ছাড়া থানার ভেতর এসে অস্ত্র চুরির ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়।

অস্ত্র খোয়া যাওয়ার পর থানার সব কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তাহলে অস্ত্র খোয়া গেল কীভাবে? থানা সূত্র বলছে, ঘটনার কাছাকাছি সময়ে পুলিশের সদস্যরা ছাড়া শুধু একজন বহিরাগত যুবক থানার ভেতর ছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গে কারও কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন থানা-পুলিশের সদস্যরা। এরপরও থানার ভেতরের কেউ যুবককে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন কি-না, সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। গাফিলতির দায়ে বরখাস্ত করা হয়েছে এএসআই হিমাংশু সাহাকে।

থানার ফটকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২৫-২৬ বছরের এক যুবক খয়েরি-সাদা চেক শার্ট আর কফি রঙের প্যান্ট, মুখে দাড়ি, কাঁধে কালো ব্যাগ নিয়ে ঘটনার দিন দুবার থানায় এসেছিলেন। প্রথম দফায় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে থানার মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে দায়িত্বরত একজন কনস্টেবল গন্তব্য জানতে চাইলে উত্তরে বলেছিলেন, শৌচাগারে যাবেন। দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে মূল ফটক দিয়েই বের হয়ে যান তিনি। মাঝের ৪৮ মিনিট থানার ভেতর তিনি কোথায় গিয়েছিলেন, তা ভেতরে থাকা অন্য সিসি ক্যামেরার কোনোটিতেই ধরা পড়েনি।

বিকাল ৪টা ২৩ মিনিটে থানার পেছনের মসজিদের গেট দিয়ে আবার থানায় আসেন যুবক। অস্ত্র বহনকারী এএসআই হিমাংশু তখন শৌচাগারে। যুবকটি ভেতরে ঢোকার পর এক রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সূত্রটি জানায়, কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে রিকশাচালককে কিছু একটা জিজ্ঞাসা করছিলেন তিনি। এরপর থানায় ঢোকার দু-তিন মিনিটের মাথায় মসজিদের গেট দিয়ে বাইরে চলে যান। এই সময়েই অস্ত্রটি চুরি হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদ গেটের সঙ্গেই থানা ভবন। জিয়া শিশুপার্কের পাশে থানার ডাম্পিং গেট দিয়ে ঢুকলে সরু পথ। যেটি দিয়ে সরাসরি থানার ভেতর প্রবেশ করা যায়। এই পথে সিসি ক্যামেরা নেই।

তদন্তকারী ডিবি দলের একজন সদস্য দৈনিক জাগরণকে বলেন, অস্ত্র উদ্ধার এবং হোতাকে ধরতে খুবই তৎপরতা চালানো হচ্ছে। কিন্তু হোতা এতই চতুরতার সঙ্গে কাজটি সেরেছে যে, রহস্য উদঘাটন করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ।

আরএম/টিএফ


 

আরও পড়ুন