• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০১৯, ০৩:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২০, ২০১৯, ০৪:২৯ পিএম

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা- ছবি : টিভি থেকে নেয়া

২১তম জাতীয় সম্মেলন

‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে/বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ/এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ'— স্লোগান ধারণ করে শুরু হয়েছে উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুই দিনের ২১তম জাতীয় সম্মেলন।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন। এ সময় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

সম্মেলন মঞ্চের দুই পাশে দাঁড়িয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও।

উদ্বোধনের পর পর দুই খণ্ডবিশিষ্ট সাংস্কৃতিক পর্বের প্রথম পর্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ী একগুচ্ছ গানের সমন্বয়ে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির নেতৃত্বে একদল শিল্পী। পরে ছিল আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্যধারার নৃত্যালেখ্য। 

নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা ও শিবলী মহম্মদের পরিচালনায় ২৫ মিনিটের নৃত্যালেখ্যে তুলে ধরা হয় বাঙালির শেকড় সন্ধানী ইতিহাস। যেখানে তুলে ধরা হয় বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ঘটনাবলীও। বাদ যায়নি বায়ান্ন ও একাত্তর। সর্বশেষ তুলে ধরা হয় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে চলা বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সাফল্য। 

বিকাল ৩টায় ৫৩ মিনিটে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। অভ্যর্থনা উপ-পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম স্বাগত বক্তব্য দেবেন। 

উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে সন্ধ্যায় বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।  এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কাউন্সিলে অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।

আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সাত হাজার ৩৩৭ জন কাউন্সিলর ও সমসংখ্যক ডেলিগেটসহ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন।

বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে এ অধিবেশনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

পেশাজীবী সংগঠনের শীর্ষ নেতা, খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ ১৫ হাজার ব্যক্তিত্বকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। 

প্রতিবছর বিদেশি রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও সামনে ‘মুজিববর্ষ’র অনুষ্ঠানমালা থাকায় জাতীয় সম্মেলনে বিদেশি প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ কাউন্সিলে উপস্থিত রয়েছেন।

দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির দুইদিনের এ সম্মেলন রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ তৈরি করেছে। দেশবাসীর দৃষ্টিও এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে।

উদ্বোধনী পর্ব উপস্থাপন করছেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে শুরু করে। সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। মূল মঞ্চ সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে। তার সামনে রয়েছে পদ্মা সেতুর অবয়ব।

উদ্যানে বঙ্গবন্ধু পরিবারের শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ছবি রয়েছে। সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন কথাও ব্যানার, পোস্টারে উঠে এসেছে।

সকাল থেকেই নেতা কর্মীরা সম্মেলনে আসতে শুরু করেছে। নেতাদের মধ্য বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

সম্মেলন ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা চোখে পড়েছে। পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। প্রত্যেককেই তল্লাশি চৌকি পার হয়ে উদ্যানে ঢুকতে হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বর্তমান কমিটির তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ২১ অক্টোবর। এর আগে অক্টোবরে নির্ধারিত সময়েই সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে সম্মেলনের তারিখ পিছিয়ে ২০ ও ২১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।

৮১ সদস্যের মধ্যে চারটি পদ শূন্য থাকায় মূল মঞ্চে চেয়ারে আছে ৭৭টি। মঞ্চের সামনে নেতা-কর্মীদের জন্য চেয়ার আছে ৩০ হাজার। এ ছাড়া সম্প্রসারিত মঞ্চে আছে ১৫ হাজার চেয়ার। ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হচ্ছে সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান।

আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রয়েছে দলটির গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।

স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগের দীর্ঘ পথ চলার বিভিন্ন ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে ১০টি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে।

ওয়েব পেজেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখা হচ্ছে।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে জন্ম আওয়ামী লীগের। এখন ঐতিহ্যবাহী এই দলটির বয়স ৭০ বছর। এ পর্যন্ত দলটির ২০ টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এর আগে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এসএমএম

আরও পড়ুন