• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২০, ০৬:২২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৩১, ২০২০, ০২:৫২ পিএম

ঢাকা দুই সিটি নির্বাচন

বাদ কাগুজে ব্যালট, শুধু ইভিএমে ভোট

বাদ কাগুজে ব্যালট, শুধু ইভিএমে ভোট
- প্রতীকী ছবি

আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার সম্পূর্ণ ইভিএম বা ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের সিটি নির্বাচনে ব্যালট কাগজ, সীল/কালি আর ব্যালট বাক্স ব্যবহারের সনাতনী পদ্ধতি সরিয়ে তাই ডিজিটাল পদ্ধতির ইভিএম প্রযুক্তি নিয়ে আসা হচ্ছে ভোটারদের সামনে।

এরইমধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে ইভি (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তবে একযোগে পুরো ঢাকা সিটির ভোটারদের মাঝে এবারই প্রথম এই পদ্ধতির প্রয়োগ হতে যাচ্ছে।ইভিএমের মাধ্যমে ভোট প্রদানের প্রক্রিয়াটি এখনও অনেকের কাছে একেবারে অজানা। নগরের ভোটারদের সুবিদার্থে ইভিএম ব্যবহারের মাধ্যমে ভোট প্রদানের প্রক্রিয়াটি তাই বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

ইভিএমের বিভিন্ন অংশের পরিচিতি ও ব্যবহার পদ্ধতি- দৈনিক জাগরণ  

সনাতনী ও ইভিএম পদ্ধতি
সনাতনী পদ্ধতিতে যে ধাপগুলো অনুসরনের মাধ্যমে একজন ভোটার তার ভোট দেয়ার কাজ সম্পন্ন করেন, ইভিএমের ক্ষেত্রেও সেই প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে। অর্থাৎ, ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের পর ভোটার কার্ডের তথ্যে যাচাইয়ের মাধ্যমে ভোটার পরিচিতি নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থী ও তার প্রতীক সীলের মাধ্যমে সনাক্ত করে ভোট প্রদান সম্পন্ন করা- এই একই প্রক্রিয়া ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয় ইভিএমে।

যেভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটার

 ভোটার পরিচিতি শনাক্তকরণ
» একজন ভোটার ভোট কেন্দ্রের নির্ধারিত কক্ষে প্রবেশের পর কর্তব্যরত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইভিএমের অপারেটিং ডিভাইসের স্ক্যানিং স্লটে ভোটারের স্মার্টকার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র প্রবেশ করিয়ে ভোটার নম্বর ও অন্যান্য তথ্যযাচাই পূর্বক ভোটারের বৈধ পরিচিতি নিশ্চিত করবেন। যার তথ্য ডিভাইসের সজ্ঞে সংযুক্ত ডিসপ্লেতে ভেসে উঠবে। তাছাড়া ভোটার স্লিপ নম্বরের মাধ্যমেও ভোটার পরিচিতি যাচাই করা যাবে।

» ভোটারের ফিঙ্গার প্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করেও এ কাজটি করা যাবে। এক্ষেত্রে ইভিএমের কন্ট্রোল ডিভাইসটির নির্ধারিত স্থানে ভোটারের আঙুলের ছাপ দেয়া হলে তার বৈধ পরিচিতি ছবিসহ স্বংক্রিয়ভাবে মেশিনের ডিসপ্লে মনিটরে চলে আসবে। এই মনিটরটি ভোটকক্ষের এমন স্থানে স্থাপন করা হবে, যেখান থেকে প্রত্যেক ভোটারের পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য উপস্থিত রিটার্নিং কর্মকর্তা, সকল প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ও ভোটার নিজে দেখতে পারবেন।

ডিজিটাল ব্যালট পেপার/ট্রে ব্যবহার করে ভোট প্রদান
» সনাতন পদ্ধতির মত এক্ষেত্রেও ভোটারকে নির্ধারিত গোপন কক্ষে পাঠানো হবে ভোট দেয়ার জন্য। ইভিএমের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত কাগুজে ব্যালট পেপার ও সনাক্তকারী সীল ব্যবহারের পরিবর্তে গোপন বুথের ভেতরে থাকা ডিজিটাল ব্যালট ট্রে ব্যবহৃত হবে। এতে ব্যালট পেপারের মতই প্রার্থীদের নাম ও পাশে তাদের প্রতীক দেখা যাবে। ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া মাত্র ব্যালট যন্ত্রের মনিটর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করবে। তখন তাতে বিভিন্ন প্রার্থীর নাম এবং প্রতীক দেখা যাবে। অন্য সময় এই যন্ত্র নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকবে।

» ব্যালট পেপারে নিজের পছন্দের প্রার্থীর নির্ধারিত প্রতীকের পাশে সীল মারার পরিবর্তে ডিজিটাল ট্রের ওপর থাকা বাটন ব্যবহার করে ভোটার যে রতীকে ভোট দেবেন তা সনাক্ত করবেন। ইভিএমের এই ডিজিটাল ব্যালট ট্রেতে প্রত্যেক প্রার্থীর নাম ও প্রতীকের পাশে আলাদা আলাদা সাদা বাটন থাকবে। ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীর প্রতীক বরাবর থাকা বাটন টিপলেই যন্ত্রের স্বয়ংক্রিয় বার্তায় বলা হবে, ‘আপনার পছন্দের প্রতীক নিশ্চিত হলে সবুজ বাটন চাপুন’। এরপর নিচে থাকা সবুজ বাটন চেপে দিলেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করা সম্পন্ন হবে।

ভুল বাটনে চাপ পড়লে সংশোধন করবেন যেভাবে
» কোনো ভোটার যদি ভুলবসত কোনো প্রতীকের পাশে থাকা বাটনে চাপ দিয়ে ফেলেন, তাহলে সবুজ বাটন চাপ দেওয়ার আগে তা সংশোধন করতে পারবেন। ভুল সংশোধন করতে এক্ষেত্রে ট্রের লাল বাটন চেপে দিলে প্রথমবার নির্ধারিত ভোটটি বাতিল হয়ে যাবে। এরপর সঠিকভাবে দেখে নিয়ে নির্ধারিত প্রতীকের পাশের বাটন চাপ দিয়ে সবুজ বাটন চাপ দিলেই ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

প্রত্যেক ভোটার ভোট প্রয়োগ নিশ্চিত করার আগে এভাবে দুবার সংশোধনীর সুযোগ পাবেন। তবে তৃতীয়বার যে প্রতীকের পাশে থাকা বাটন চাপা হবে, ভোট সেই প্রার্থীকেই দেয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।

» ভোটার যখন গোপন কক্ষের ভেতরে থাকবেন, তখন বাইরের মনিটরে লেখা থাকবে, ‘ভোট গ্রহণ চলছে’। প্রত্যেক ভোটারের ভোট প্রদান সম্পন্ন হলে বাইরের মনিটরে, কেন্দ্রের মোট ভোটারের সংখ্যা এবং যতজন ভোট দিয়েছেন, তাদের সংখ্যা দেখা যাবে। ফলে এর বাইরে কোনো ভোট এলে পোলিং এজেন্ট সঙ্গে সঙ্গে তা বুঝতে পারবেন। 

» কোনো ভোটার যদি একাধিকবার ভোট দিতে আসেন, তবে পরিচিত সনাক্ত করার সময়ই ইভিএম জানাবে যে, এই ব্যক্তির ভোট এরইমধ্যে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে উক্ত ভোটার জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করছেন এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার সংক্রিয় নির্দেশও প্রধান করবে ইভিএম।

এসকে

আরও পড়ুন