• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২০, ০৭:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১৮, ২০২০, ০৭:৩০ পিএম

দ. এশিয়ার জনগোষ্ঠী জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার

দ. এশিয়ার জনগোষ্ঠী জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার

দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসমতা দূর করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা বলেছেন, এরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গ নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্যগুলো সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কারণেই সৃষ্টি হয়েছে।

বৈষম্যহীন দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে সকলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দাবিতে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাউথ এশিয়ান অ্যালায়েন্স ফর পভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপি)-বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্যাপির সদস্য, বিএমএ-এর সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহবুব। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক ও নারীনেত্রী এবং স্যাপি-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রোকেয়া কবীরের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ, পঙ্কজ ভট্টাচার্য,  শিশু সংগঠক ও কেন্দ্রীয় খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক ডা. লেনিন চৌধুরী, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি)-র নির্বাহী পরিচালক নূমান আহম্মেদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিমউদ্দীন খান, অক্সফামের পলিসি, অ্যাডভোকেসি, ক্যাম্পেইন এবং কমুনিকেশন ম্যানেজার মঞ্জুর রশিদ। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইনসিডিন বাংলাদেশের পরিচালক মুশতাক আলী ।

রোকেয়া কবীর বলেন, আমরা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণ ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের অর্থনৈতিক আলোচনাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য একত্রে দাঁড়িয়েছি, যার নামে ধনী, অভিজাত এবং বৃহৎ বহুজাতিক করপোরেশনগুলো জলবায়ুকে ধ্বংস করছে এবং নারী, শ্রমিক ও আদিবাসী জনগণের অধিকারগুলো ছিন্ন করতে মুনাফা এবং শক্তি প্রয়োগ করছে। আমরা একটি মহৎ সমতাভিত্তিক বিশ্ব বিনির্মাণে একত্রে দাঁড়িয়েছি, যেখানে সকল মানুষের অধিকার সম্মানিত এবং পরিপূর্ণ, সকল সম্ভাবনা, সুযোগ এবং খ্যাতি সবাই ভাগ করে নেয় ।

এমএম আকাশ বলেন, মাত্র ৩০০ জন ধনীর আয় বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর আয়ের সমান। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ, লজ্জাকর। দেশে বিপজ্জনক মাত্রায় অসমতা বাড়ছে। 

তানজিমউদ্দীন খান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গ নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বিগত ৩০ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় বৈষম্য চরমভাবে বেড়েই চলেছে। 

পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, নাগরিক সমাজ এবং রাষ্ট্রের মধ্যকার সামাজিক চুক্তিকে ধ্বংস করে এবং বাকস্বাধীনতা ও মুক্ত সহযোগিতায় বাধা সৃষ্টি করে জনগণকে দরিদ্র ও নীরব রাখার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাবানকে শক্তিশালী করার সিস্টেমের বিরুদ্ধে আমরা। একটি নতুন অর্থনৈতিক মডেলের দাবিতে আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশের সক্রিয়জন, সামাজিক আন্দোলন, নারীবাদী, আদিবাসীসহ সকলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যা মানুষের অর্থনৈতিক সুবিধা, শান্তি ও গণতন্ত্র পুনর্নিমাণ করবে এবং একটি অধিকতর ভালো বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরি করবে। 

নূমান আহম্মেদ খান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার জনগোষ্ঠী জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গ নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্যগুলো সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। এই বৈষম্য কমাতে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।

ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, বিশ্বব্যাপী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে ১৯৯০-২০১৩ সময়ের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী দরিদ্র লোকের সংখ্যা ২৪৮.৮ মিলিয়ন হ্রাস পেলেও পালমা রেশিও (বৈষম্যের সূচক) দ্বারা দক্ষিণ এশিয়ার ১০ শতাংশ ধনী ব্যক্তির সামগ্রিক জাতীয় আয়কে (জিএনআই) ৪০ শতাংশ দরিদ্র ব্যক্তির সামগ্রিক জাতীয় আয় দিয়ে ভাগ করে দেখা যায়, উপরের ১০ শতাংশের আয়ের তুলনায় নিচের ৪০ শতাংশের আয় হ্রাস পাচ্ছে।

টিএস/ এফসি