• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২০, ১০:৪১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৭, ২০২০, ১১:৩৩ এএম

করোনাভাইরাস

চীনে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ৮০

চীনে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ৮০
করোনাভাইরাস আতঙ্কে মা ও শিশু ● ইন্টারনেট

ভাইরাস ছড়িয়েছে ১৫টি দেশে

আন্তর্জাতিক মহলের আরও উদ্বেগ বাড়িয়ে চীনের বাইরে আরও ১৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে চীন, হংকং থেকে ভারতে ফিরেছেন প্রায় ২০ হাজার নাগরিক। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের থার্মাল টেস্ট করা হচ্ছে। কারোর মধ্যে সংক্রমণের সামান্য আঁচ পেলেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমণ না থাকলেও চীন ফেরত ব্যক্তিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।

হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত মোট ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০।

আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে খবর পাওয়া গেছে। খবর বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের। 

মরণব্যাধি মোকাবেলায় তৎপরতার সঙ্গে চীনে হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী করোনাভাইরাস জুনোটিক। অর্থাত্‍ এই ভাইরাস পশুর দেহ থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি সিফুড এবং বন্যপ্রাণির বাজার থেকে অজ্ঞাত কোনও প্রাণির থেকে সেটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চীনসহ বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূল উৎসই হচ্ছে বিষধর চীনা সাপ ক্রেইট এবং কোবরা সাপ। করোনাভাইরাস বাতাসে মিশে প্রাথমিকভাবে স্তন্যপায়ী প্রাণি এবং পাখির শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ করে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

২০১৯ সালে চীনের হুয়ান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের বিষয়টি সামনে আসে। যা খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

চীনের বুকে মৃত্যুর তাণ্ডব চলছে অন্যদিকে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে হু হু বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সকল প্রস্তুতি, প্রতিকার যেনো শুধুই সান্ত্বনার বাণী। ভাইরাসটির শনাক্তস্থলে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন হাজারো মানুষ। শুধু তাই নয়, চীনের সীমানা পেরিয়ে ভাইরাসটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আরও অন্তত ১৫টি দেশে।

বিবিসি নিউজ বলছে, নতুন করে মারা যাওয়া অধিকাংশই উহান প্রদেশের। এখান থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল। আর সব মিলিয়ে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এরইমধ্যে দুই হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা প্রায় চার হাজারের অধিক।

চলমান এই সঙ্কট মোকাবেলায় রীতিমতো হিমশিম খেতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। চীনসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বিজ্ঞানীরা একযোগে কাজ শুরু করেছেন করোনাভাইরাসের প্রতিকার ও প্রতিষেধক নিশ্চিত করতে। 

এই ভাইরাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন(ডব্লিউআইও) বলেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্বজুড়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। মেনে চলতে হবে বিশেষজ্ঞদের দেয়া প্রাথমিক নির্দেশনাসমূহ।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনও কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

এসকে/এসএমএম

আরও পড়ুন