• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০, ০৮:০৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০, ০৮:০৬ পিএম

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো...

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো...

‘আমার শহীদ ভাইয়ের আত্মা ডাকে/জাগে মানুষের সুপ্ত শক্তি, হাটে মাঠে ঘাটে বাঁকে/দারুণ ক্রোধের আগুনে জ্বালবো ফেব্রুয়ারি/একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি— বরেণ্য সাংবাদিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ কবিতার শেষ ক’টি লাইনের মতোই শহীদ ভাইয়ের আত্মার ডাকে বাঙালির কোটি প্রাণ ভাই হারানোর শোকে মুহ্যমান। একই সঙ্গে দ্রোহের আগুনেও বলীয়ান। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফাল্গুনের সোনাঝরা রোদ্দুরে নিজ ভাষায় কথা বলার দাবিতে, মায়ের মুখের ভাষার সম্মান প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে, প্রকাশ্য রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন বাংলার বীরসন্তানরা। 

ভাষার প্রশ্নে একুশের আন্দোলন হলেও প্রকৃত প্রস্তাবে তা ছিল শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রথম সম্মিলিত প্রতিবাদ। রক্তঝরা সে দিনটি তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে আত্ম-অধিকার সচেতন করেছিল। সেখান থেকেই সমতাভিত্তিক সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়।

পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়ার প্রথম দৃষ্টান্ত এটি।

মাতৃভাষার জন্য বাঙালির গৌরবময় আন্দোলনের ৬৮ বছর পূর্ণ হচ্ছে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি)।

সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউরের রক্তে সিক্ত শোকের দিনটি এখন অহঙ্কার ও গৌরবের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তাই বরাবরের মতো অনন্য আয়োজনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। 

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে ফেব্রুয়ারির এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮ দেশে একযোগে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালি জাতির জন্য এক অনন্যসাধারণ অর্জন। 

বাঙালি জাতির জন্য দিনটি যেমন চরম শোক ও বেদনার তেমনি মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত।

যে কোনও জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার-মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদরা জাতিকে সেমহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলা’কে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

তাদের এই আত্মদান নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম তার ‘বায়ান্নরও আগে’ প্রবন্ধে লিখেছেন—

‘‘বরকত, সালামকে আমরা ভালবাসি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা বরকত সালাম আমাদের ভালবাসে। ওরা আমাদের ভালবাসে বলেই ওদের জীবন দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ওরা আমাদের জীবনে অমৃতরসের স্পর্শ দিয়ে গেছে। সে রসে আমরা জনে জনে, প্রতিজনে এবং সমগ্রজনে সিক্ত।’’

তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা অমরতা পেয়েছি উল্লেখ করে সরদার ফজলুল করিম আরও লেখেন—

‘‘আজ আমরা বলতে পারি দস্যুকে, বর্বরকে এবং দাম্ভিককে তোমরা আর আমাদের মারতে পারবে না। কেননা বরকত সালাম রক্তের সমুদ্র মন্থন করে আমাদের জীবনে অমরতার স্পর্শ দিয়ে গেছেন।’’

বরেণ্য শিক্ষাবিদ আবুল ফজল একুশ নিয়ে তার এক লেখায় লিখেছেন —

‘‘মাতৃভাষার দাবি স্বভাবের দাবি। ন্যায়ের দাবি, সত্যের দাবি— এ দাবির লড়াইয়ে একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদরা প্রাণ দিয়েছেন। প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন, স্বভাবের ব্যাপারে, ন্যায় ও সত্যের ব্যাপারে কোনও আপস চলে না, চলে না কোন গোঁজামিল। জীবন-মৃত্যুর ভ্রকুটি উপেক্ষা করেই হতে হয় তার সম্মুখীন।’’

২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সরকারি ছুটির দিন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারা দেশের স্থায়ী-অস্থায়ী শত শত মিনারে দিনভর চলবে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন। বিশ্বের দেশে দেশে নানা ভাষা, নানা বর্ণ, নানা সংস্কৃতির মানুষ গাইছে একুশের অমর গান— ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।’

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।  

বাণীতে তারা ভাষার জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের চেতনায় শহীদদের স্বপ্ন পূরণে দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তারা।

অমর একুশে পালন নিরাপদ রাখতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, আজিমপুর কবরস্থানসহ একুশের প্রভাতফেরি প্রদক্ষিণের এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রণয়ন করা হয়েছে শহীদ মিনারে প্রবেশের রোডম্যাপ। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৭টা থেকেই এটি কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকায় সর্বসাধারণের সুবিধার্থে যানবাহন চলাচলও নিয়ন্ত্রণ থাকবে। শুধু সুনির্দিষ্ট স্টিকারসংবলিত যানবাহন ওই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে।

শহীদ মিনার এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ছদ্মবেশ ও সাদা পোশাকে র‌্যাবের গোয়েন্দা সদস্যরা নজরদারি করছেন। র‌্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড শহীদ মিনার এলাকায় প্রয়োজনীয় সুইপিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রস্তুত স্ট্রাইকিং ফোর্সও।

এদিন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনগুলোয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। 

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সকাল ৭টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করবে। ২২ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বিকাল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বিএনপি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ছাড়াও ভোর ৬টায় কালো ব্যাজ ধারণ এবং আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের কবর জিয়ারত করবে। 

একুশের চেতনা অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস : রাষ্ট্রপতি

আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস। মাতৃভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি সংরক্ষণে দিবসটি উদযাপন এক অনন্য উদ্যোগ।

আবদুল হামিদ বলেন, ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র রক্ষারও আন্দোলন। অমর একুশের অবিনাশী চেতনা-ই দেশের জনগণকে স্বাধিকার, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অফুরন্ত প্রেরণা ও অসীম সাহস যুগিয়েছে।ফেব্রুয়ারির রক্তঝরা পথ বেয়েই অর্জিত হয় মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতি এবং তারই ধারাবাহিকতায় আসে বাঙালির চিরকাঙ্খিত স্বাধীনতা, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

‘‘নিজস্ব মাতৃভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি বহুভাষিক শিক্ষার মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন ইতিবাচক অবদান রাখবে’’

............

তিনি বলেন, ভাষা ও সংস্কৃতি মানবজাতির অমূল্য সম্পদ। এটি মহাকালকে যেমন ধারণ করে, তেমনি মানব ইতিহাসের বৈচিত্রময় জীবনধারাকে প্রবাহমান রাখে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। দারিদ্র্য, সাম্রাজ্যবাদ, বাণিজ্যবাদ, ধর্মপ্রচার, অভিবাসন, উদ্দেশ্যমূলক আর্থিক ও মানবিক সহযোগিতা, ভাষার উপযুক্ত চর্চার অভাব, জনসংখ্যা হ্রাস, পরিবেশের অবক্ষয়, আকাশ সংস্কৃতিসহ নানা কারণে পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত কোনও না কোনও ভাষার বিলুপ্তি ঘটছে। ভাষার বিলুপ্তি মানে এক একটা সংস্কৃতির বিলোপ, জাতিসত্তার বিলোপ, সভ্যতার অপমৃত্যু। মাতৃভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশসহ সকল জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ বিশ্বে বিরল ঘটনা। ১৯৯৯ সালে কয়েকজন মাতৃভাষাপ্রেমী প্রবাসী বাঙালির প্রাথমিক উদ্যোগ এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ ও ঐকান্তিক চেষ্টায় জাতিসংঘ কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এ ছিল বাঙালি হিসেবে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। বিশ্বের বিকাশমান ও বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলোর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় গবেষণার জন্য ২০০১ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও উন্নয়নে তাদের নিজস্ব ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিজস্ব মাতৃভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি বহুভাষিক শিক্ষার মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন ইতিবাচক অবদান রাখবে।

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, বিশ্বের সব নাগরিকের সত্য ও ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণার উৎস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে গত ১১ বছরে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ডাকে। এদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেক ছাত্রনেতা গ্রেফতার হন। ১৫ মার্চ তারা মুক্তি পান। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু।

‘একুশে ফেব্রুয়ারির সেই রক্তস্নান গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়’’

............

তিনি বলেন, এরপর মাতৃভাষার দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি মুক্তি পান। ১৯ এপ্রিল আবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। জুলাই মাসের শেষে তিনি মুক্তি পান। ১৪ অক্টোবর ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে আবারও গ্রেফতার করা হয়। কারাগার থেকেই তার দিক-নির্দেশনায় আন্দোলন বেগবান হয়। সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহীদরা।

তিনি বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারির সেই রক্তস্নান গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কানাডা প্রবাসী সালাম ও রফিকসহ কয়েকজন বাঙালি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করে। যার ফলে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

ছবি ● সংগৃহীত

এসএমএম