• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২০, ০৮:৩৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২২, ২০২০, ০৮:৩৬ এএম

প্রকট করোনা সংকট

লকডাউন বাংলাদেশ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

লকডাউন বাংলাদেশ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশ লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দেশে ব্যাপক হারে ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে না পড়ে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২১ মার্চ) বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে বিপর্যয় বাড়ার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সম্ভাব্যতা বিচারে বাংলাদেশকে লকডাউনের পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।

এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে জনসমাগমের মতো সব অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পূর্ণ স্থগিত রাখা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্র, প্রেক্ষাগৃহ। কিন্তু সম্প্রতি বিদেশ ফেরত সাড়ে ৬ লাখ মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে আবদ্ধ রাখা যায়নি। তারা সরকারি নির্দেশনা মানছে না। হোম কোয়ারেন্টাইনের শর্ত পালন না করে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এরইমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তারা দেশে এসে বাস, ট্রেন এবং লঞ্চে করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিয়ে ও জন্মদিনের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন। বড় কমপ্লেক্সে শপিং করেছেন। এছাড়া মসজিদে জামাতে নামাজ পেড়েছেন। এদের সংস্পর্শে আসা কয়েকজনও আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভাইরাসটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

তারা মনে করছেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের উচিত সাময়িক সময়ের জন্য গোটা দেশ লকডাউন করা। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার আগেই সেটি করতে হবে। ছড়িয়ে পড়ার পর লকডাউন করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না।

মহাখালীস্থ স্বাস্থ্য ভবনে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় উপস্থিত কয়েকজন জানিয়েছেন, সেখানেও লকডাউন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় কীভাবে লকডাউন করা যাবে, এতে কী কী সমস্যা হতে পারে, সেগুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের বেশির ভাগই লকডাউন করার পক্ষে মত দিয়েছেন।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশকে লকডাউন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শনিবার রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্রের কমিউনেকেবল ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশনের (এসডিসিপি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন এ তথ্য জানান। সাঈদ খোকন বলেন, আজ আমাদের পর্যালোচনার সময় এসেছে।

লকডাউন করলেও ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে কীভাবে বা কত সময় লকডাউন করা যায়, সেসব বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা বলেন, বাংলাদেশ কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, সে সিদ্ধান্ত আমরা দিতে পারি না। এটা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। আমরা কেউ ঝুঁকির বাইরে নেই। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, বিশ্বের অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থাও বাংলাদেশ সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জরুরি অবস্থার বিষয়গুলো সামনে আসছে। এটা তো আমরা বললে হবে না। এখানে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় রয়েছে। সরকার যদি ভালো মনে করে তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে অবশ্যই এটা করতে পারে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে দেশে লকডাউন ঘোষণার দাবি উঠে আসছে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকেও। বিশেষ করে ইতালির বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ দাবি আরো জোরদার ভাবে উঠতে শুরু করেছে।

এসকে