• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২০, ১০:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২৪, ২০২০, ০৯:৩০ এএম

কোভিড-১৯

আজ মাঠে নামবে সেনাবাহিনী

আজ মাঠে নামবে সেনাবাহিনী
প্রতীকী ছবি

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনসমাগম পরিহার ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) থেকে সারা দেশে নামছে সেনাবাহিনী। দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে।

সোমবার (২৩ মার্চ) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত থাকবে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে তারা (সেনাবাহিনী সদস্যরা) জেলা ও বিভাগীয় কভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে।

বিদেশফেরত ব্যক্তিদের কেউ নির্ধারিত কোয়ারেন্টিনে বাধ্যতামূলক সময় পালনে ত্রুটি বা অবহেলা করছে কি না তা পর্যালোচনা করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা এ জন্য স্থানীয় সেনা কমান্ডারের কাছে সেনাবাহিনী কর্তৃক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য আইন অনুসারে অনুরোধ জানাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ২৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে ৪ এপ্রিল (শনিবার) পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। 

কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, হাসপাতাল, ফার্মেসি এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলো ছুটির আওতার বাইরে থাকায় এগুলো খোলা থাকবে।

সরকার ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সরকারি ছুটি এবং ২৭ এবং ২৮ মার্চ এবং ৩ এবং ৪ এপ্রিল সরকারি ছুটি এরসঙ্গে যুক্ত হবে।

আনোয়ারুল ইসলাম জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে তারা বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর ১০টি নির্দেশনার একটি সেট প্রস্তুত করেছেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাজেই জনগণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে তারা যেন জরুরি প্রয়োজন যেমন- খাদ্য সামগ্রী ক্রয়, ওষুধ কেনা, চিকিৎসাসেবা গ্রহণ এবং মৃতদেহ সৎকার ব্যতীত বাড়ির বাইরে বের না হন।

কেবিনেট সচিব বলেন, যদি কোনও দফতরের কোনও জরুরি কাজের প্রয়োজন হয় তবে তা অনলাইনের মাধ্যমে (ছুটির দিনগুলোতে) করতে পারে। যারা তাদের অফিস খোলা রাখাটা প্রয়োজনীয় মনে করবেন তারা কেবল সরকারি অফিসের সময়ে এটা করতে পারবেন। তবে জনগণের প্রয়োজনীয়তা মেনে সীমিত আকারে ব্যাংকগুলো খোলা রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, সরকার ঘোষিত ছুটির সময়ে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো খোলা থাকবে কারণ তারা এখন কর্মী সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুত করছে । তবে আরএমজি মালিকরা তাদের কারখানায় এরই মধ্যে সতর্কতা অবলম্বন করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা চট্টগ্রাম থেকে ১০ হাজার পিপিই পেয়েছি এবং আগামীতে আরও ৯০ হাজার পাবো।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনসাধারণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি-ঘরের বাইরে না যেতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, অফিস-আদালতের প্রয়োজনীয় কাজ-কর্ম অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেতে পারে এবং প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যে কোনও সরকারি অফিস খোলা রাখতে পারে।

আনোয়ারুল বলেন, ছুটির দিনে গণপরিবহন চলাচল সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে জনগণকে গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যদি কোনও যাত্রী জরুরি প্রয়োজনে গণপরিবহনে ভ্রমণ করতে চান তবে তাকে অবশ্যই ভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। হ্যান্ড গ্লাভস এবং মাস্ক পরার পাশাপাশি চালক ও হেল্পারদের অবশ্যই পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,  ঘরে ফেরা কর্মসূচি’র আওতায় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নগরীর নিম্ন-আয়ের লোকেদের সহায়তা দেবে এবং এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সরকার জীবিকার সুযোগ তৈরি করেছে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত ভাসানচরে প্রায় এক লাখ লোকের আবাসন নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে আনোয়ার বলেন, জেলা প্রশাসনকে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে আগ্রহীদের এ দ্বীপে পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে দরিদ্র জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের খাদ্য ও সহায়তা প্রদানের জন্যও জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য ৫০০ জন চিকিৎসকের একটি তালিকা প্রস্তুতের জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-কে নির্দেশ দিয়েছেন।

সরকার দেশের সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সমাবেশে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে উল্লেখ করে তিনি কোভিড-১৯-এর লক্ষণযুক্ত লোকদের নামাজের জন্য মসজিদে না যাওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

এসএমএম