করোনা-সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা দেখতে বিভিন্ন হাসপাতালে একই সঙ্গে শারীরিক পরীক্ষা চলছে দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার ১৭৫ জনের। দেশে এই প্রথম এত জন করোনা-সন্দেহভাজনদের একসঙ্গে নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তাদের অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।
সেই আশঙ্কা সত্যি হলে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে পারে অনেকটাই। আনন্দবাজার।
কেন এমন আশঙ্কা? দিল্লি প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি মাসের মাঝামাঝি বাংলাওয়ালি মসজিদে একটি অনুষ্ঠানের বহু মানুষের জমায়েত হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও ওই জমায়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব এবং কিরঘিজস্তানের নাগরিকরা। ঘটনাচক্রে ওই অনুষ্ঠানে যোগদানের পর চলতি মাসে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও তামিলনাড়ুর ওই ব্যক্তি যে করোনা-সংক্রমণের জেরেই মারা গেছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। তবে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়।
পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশের যে ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তিনিও দিল্লির ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। এছাড়া শ্রীনগরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত সপ্তাহে যে ধর্মগুরুর মৃত্যু হয়েছে, তিনিও ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। কাশ্মীরে নিজের বাড়িতে ফেরার আগে তিনি উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দেও যান। ফলে তার সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন, তারও খোঁজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
প্রশাসনের তরফে জানান হয়, এরই মধ্যে ওই অনুষ্ঠানের পর তাতে আমন্ত্রিত একজন ইন্দোনেশীয় এবং সৌদি আরবের ৬ জন নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এতে যোগদানকারীদের মধ্যে ১২শ জনের মসজিদের ভেতরে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এলাকায় আর কারও করোনা-সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য মসজিদের পাশেই একটি অস্থায়ী চিকিত্সা শিবির গড়া হয়েছে।
দক্ষিণ দিল্লির ওই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার প্রায় দু’হাজার জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এলাকায় পুলিশের টহলদারি ছাড়াও ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালানো হচ্ছে, যাতে লকডাউনের বিধিনিষেধ মেনে চলেন সবাই। তবে এই নজরদারি সত্ত্বেও প্রশাসনের শঙ্কা, অনেকেই হয়তো করোনায় আক্রান্ত। কারণ, ওই অনুষ্ঠানের পর অনেকেই সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফিরে গেছেন।
এসএমএম