২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে আত্মগোপনে ছিল জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল মাজেদ।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) বিবিসি বাংলাকে এ কথা জানান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন।
তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর আদালতে তোলার আগে কিছুটা সময় আবদুল মাজেদের সাথে তার কথা হয়েছে।
সে সময় তিনি (আবদুল মাজেদ) তাকে জানান, গত ২০ থেকে ২২ বছর ধরে তিনি ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। ভারতের কলকাতায় তিনি থাকতেন বলে জানান। তবে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি কোন জায়গার নাম উল্লেখ করতে পারেননি।
গত মাসের ১৫-১৬ তারিখের দিকে আবদুল মাজেদ বাংলাদেশে প্রবেশ করেন বলেও জানান তিনি।
তিনি কিভাবে বাংলাদেশে আসলেন সেটা জানায়নি বলে উল্লেখ করেন হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) ভোর রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে মিরপুরের গাবতলী এলাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিস) ইউনিটের একটি বিশেষ দল।
দেশে ফেরার পর তিনি কোথায় থাকতেন বা কী করতেন সে বিষয়েও কিছু জানা যায়নি।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত ১৫ মার্চের দিকে আবদুল মাজেদ বাংলাদেশে ঢোকার পর পরই ইন্টারপোলের মাধ্যমে তারা সেটি জানতে পারেন।
সেই তথ্য অনুযায়ী, তাকে ট্র্যাক করে গ্রেফতারের তৎপরতায় ছিল পুলিশ।
সূত্রগুলো বলছে, আবদুল মাজেদ যে ভারতে ছিলেন গ্রেফতারের পর তিনি তা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন আরও বলেন, আবদুল মাজেদ গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন, তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে মহানগর পুলিশ। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, যেহেতু সাজা ঘোষণার অনেক দিন পর তাকে গ্রেফতার করা হলো তাই আপিল করার কোনও সুযোগ পাবেন না তিনি।
তবে সে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবে।
প্রাণভিক্ষা না চাইলে, বিধি মোতাবেক তার সাজা কার্যকর করা হবে।
আবদুল মাজেদ গ্রেফতার হলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও পাঁচজন পলাতক রয়েছে। এরা হলেন—লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (অব.) এএম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান। বিবিসি বাংলা।
এসএমএম