বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারী প্রাদুর্ভাব। দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এরই মধ্যে ভয়াবহ রুপ নিতে শুরু করেছে করোনার প্রভাব। যার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। দেশের মোট করোনা আক্রান্তের অর্ধেকই ঢাকার বুকে। বিশেষ করে উত্তরা এলাকায় এই আক্রান্তের সংখ্যা বিপদজনক হারে বাড়ছে।
ভিডিও: জনসচেতনতায় কাউন্সিলরের মাইকিং- সামাজিক যোগাযোগ্মাধ্যম হতে সংগৃহিত
রোববার (১২ এপ্রিল) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উত্তরা সংলগ্ন তুরাগ থানাধীন এলাকায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগি শনাক্ত হওয়ার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এলাকাবাসীর মাঝে। এমন পরিস্থিতির মাঝে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সার্বিক সহযোগিতার কথা জানান দিতে হঠাৎ করেই রাত আনুমানিক ১০টা নাগাদ শুরু হয় জরুরি মাইকিং। খুব চেনা কন্ঠের সেই মাইকিং শুনে ভবনের জানালা দিয়ে রাস্তায় উঁকি দিতেই দেখা যায়, সচেতনতামূলক সেই মাইকিং করতে মাইক হাতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন খোদ ডিএনসিসি ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ।
এ সময় রিক্সায় চেপে আনুমানিক দু'ঘন্টারও বেশি সময় পুরো ৫৪ নং ওয়ার্ডের প্রতিটি রাস্তায় রাস্তায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালান তরুন এই কাউন্সিলর। এর আগে নিজের পুরো এলাকাজুড়ে লকডাউন কার্যকর করার লক্ষ্যে স্থানীয় তরুণদের নিয়ে স্বচ্ছাসেবক দল গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও সেনা সদস্যদের সঙ্গে মাঠে নামেন তিনি। প্রতি দিন এলাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে পাহারা বসিয়ে মানুষকে সচেতন করতে ও ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করতে এবং সেই সঙ্গে মানুষের বাড়ি বাড়ি বাজার পৌঁছে দেয়ার দারুণ উদ্যোগ গ্রহনে ব্যাপক প্রশংসিত হন ৫৪ নং ওয়ার্ড থেকে টানা দু'বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ।
তবে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দৈনিক জাগরণকে তিনি বলেন, আমি পদক্ষেপের প্রশংসা চাই না। আমি চাই আমার নেয়া পদক্ষেপগুলো যাতে মানুষের জন্যে সত্যি কাজে লাগে। সাক্ষাতকার দেয়ার মত বিশেষ কিছুই করিনি ভাই। যা করণীয় আমি তাই করেছি। আমি একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এই দিনের জন্যেই আমাকে বেতন দেয় জনগণ। আমি কতটা করতে পারব জানি না। তবে প্রচেষ্টা থামাবো না। যে করে হোক আমার এলাকার মানুষকে বাঁচাতে তো হবে।
এসময় করোনার ভয়াবহতা আমলে নিয়ে প্রত্যেককে দায়িত্বরত প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে সহায়তা করার জন্য আহ্বানও জানান তিনি।
চলমান এই সংকটের মাঝে প্রতিদিন যেখানে দেশের নানা জায়গা থেকে খোঁজ মিলছে বহু জনপ্রতিনিধি আর রাজনৈতিক নেতাদের চাল চুরির ঘটনার, ঠিক সে সময় কাউন্সিলর যুবরাজের মত একজন তরুন জনপ্রতিনিধির এমন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সচেতনতা ফেরি করার ঘটনাটি সত্যি হৃদয় কেড়ে নিয়েছে মানুষের।
মাশরাফী, যুবরাজদের মত এমন সম্ভাবনাময় তরুণ, নিবেদিত জন প্রতিনিধিরা আছেন বলেই সুন্দর একটি আগামীর তরে, করোনার বিরুদ্ধে বুকচিতিয়ে লড়াই করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। সেক্ষেত্রে প্রত্যেকেই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে এমন একটু তৎপর হয়ে ওঠেন, হয়তো এ যুদ্ধেও বীরদর্পে জিতে যাবে বাংলাদেশ।