• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২০, ১০:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১০, ২০২০, ১০:৩২ পিএম

সর্বাধিক অগ্রাধিকার স্বাস্থ্যখাত

অবরুদ্ধ সময়ে নতুন বাজেট পেশ বৃহস্পতিবার

অবরুদ্ধ সময়ে নতুন বাজেট পেশ বৃহস্পতিবার
অধিবেশন কক্ষ ● ফাইল ছবি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটি হবে দেশের ৪৯তম এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের দ্বিতীয় বাজেট উপস্থাপন।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির প্রেক্ষিতে এবারের বাজেট গতানুগতিক হচ্ছে না। বরং সরকারের অতীতের অর্জন ও উদ্ভূত পরিস্থিতির সমন্বয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যত পথ পরিক্রমা’ শিরোনামের এই বাজেটে সঙ্গত কারণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্যখাত।

পাশাপাশি কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরির প্রতি দেয়া হচ্ছে অগ্রাধিকার।

অর্থ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়,এসব অগ্রাধিকার খাতের পাশাপাশি বাজেটে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন প্রস্তাব থাকবে। ২০০৯ সাল থেকে একাধিক্রমে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এটি হচ্ছে দ্বিতীয় বাজেট।

করোনা সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এবারের বাজেট অধিবেশনে মিডিয়া কাভারেজের জন্য সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার থাকছে না। এমতাবস্থায় সাংবাদিকদের বাজেট ডকুমেন্টস সংসদ ভবনের বাইরে পশ্চিম পার্শ্ববর্তী মিডিয়া সেন্টার থেকে ৩ টা ১৫ মিনিটে বিতরণ করা হবে।

বাজেটকে অধিকতর অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট www.mof.gov.bd  এ বাজেটের সব তথ্যাদি ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল যে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবে এবং দেশ-বিদেশ থেকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফিডব্যাক ফরম পূরণ করে বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ প্রেরণ করা যাবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, এভাবে প্রাপ্ত মতামত ও সুপারিশ বিবেচনায় নেয়া হবে। জাতীয় সংসদ কর্তৃক বাজেট অনুমোদনের সময়ে ও পরে বিবেচিত প্রস্তাব কার্যকর করা হবে।

এছাড়া বাজেটকে ব্যাপকভিত্তিক অংশগ্রহণমূলক করতে সরকারের কয়েকটি ওয়েবসাইট লিংক ব্রাউজ করে বাজেট সংক্রান্ত তথ্যাদি পাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। ওয়েবসাইটের ঠিকানাসমূহ হলো—

www.bangladesh. gov.bd

যেভাবে কাটলো বাজেট অধিবেশন শুরুর দিন

সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির মধ্যে কঠোর সতর্কতা মেনে জাতীয় সংসদের বাজেট (অষ্টম) অধিবেশন শুরু হয়। 

বুধবার (১০ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশন শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে মূলতবি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকাল ৩টায় অধিবেশনে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা শেষে আগামী ৩০ জুন (মঙ্গলবার) বাজেট পাস হবে।

করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার কারণে অধিবেশনের আগে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়নি।

কঠোর সতর্কতায় শুরু হওয়া এই অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ স্বল্প সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নেন। তবে সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ সিনিয়র সংসদ সদস্যরা অনুপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত সংসদ সদস্যরা বিগত দিনের আসন বন্টন এড়িয়ে করোনা সতর্কতা মেনে আসন গ্রহণ করেন। অধিবেশন কক্ষে এক থেকে দু’টি আসন পর পর তারা বসেছিলেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস ও মাথায় ক্যাপ ছিল।

সংসদ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সংসদ ভবনের প্রবেশমূখে সকলকেই জীবাণু নাশক স্প্রে করা হয়। সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের তাপমাত্রা মাপা হয়।

নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে সব পদক্ষেপ নেয়া হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের শুরুতেই বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকসহ মৃত্যুবরণকারী অন্যান্যদের জন্য শোক প্রকাশ করেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও অধিবেশন ডাকার কারণও ব্যাখ্যা করেন। সম্ভাব্য সকল স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন স্পিকার।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত সময়ের জন্য অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সংসদে বাজেট পেশ করবেন। এরপর আলোচনা শেষে আগামী ২৯ জুন (সোমবার) অর্থবিল ও ৩০ জুন (মঙ্গলবার) বাজেট পেশ হবে। অধিবেশনে সরকারি দল, বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের অনুমতি নিয়ে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, এ বি তাজুল ইসলাম, মুহিবুর রহমান মানিক, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মেহের আফরোজ চুমকিকে সভাপতিমণ্ডলির সদস্য নির্বাচিত করেন।

পরে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গত অধিবেশনের পর রাষ্ট্রপতি জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহ সংসদে উত্থাপন করেন।

প্রধম দিনে অধিবেশনের প্রধান কার্যসূছি ছিল শোক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা। চলতি সংসদের সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লাসহ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতে এই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এই আলোচনায় অংশ নেন সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা।

আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিতে শোক প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। এরপর প্রয়াতদের স্মরণে নিরাবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মিয়া। শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে দিনের অন্যান্য কার্যসূচি স্থগিত করে অধিবেশন মূলতবি করা হয়।

এসএমএম

আরও পড়ুন