• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২০, ০৭:০৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২১, ২০২০, ০৭:০৭ এএম

আসন্ন ৫ আসনে উপনির্বাচন

মনোয়ন প্রত্যাশিদের যোগ্যতা যাচাইয়ে আওয়ামী লীগের ‘পঞ্চতত্ত্ব’

মনোয়ন প্রত্যাশিদের যোগ্যতা যাচাইয়ে আওয়ামী লীগের ‘পঞ্চতত্ত্ব’

জাতীয় সংসদের ৫টি শূন্য আসনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপনির্বাচন। আর এই উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ মূলত অনুসরন করবে হাইকমান্ডের 'পঞ্চতত্ত্ব'। দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে।

দলীয় সূত্রের তথ্য মতে, মূলত ৫টি বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে। মূলত সাংগঠনিক পর্যায়ে অভিজ্ঞ, নিবেদিত এবং সৎ রাজনীতিকদের জনপ্রতিনিধিত্বে নিয়ে আসার কথা ভাবছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। জানা গেছে, এরমাধ্যমে দলে অপ্রত্যাশিত অনুপ্রবেশ রোধ ও স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি দুর্নীতি অপসারনে নিষ্ঠাবন ও সৎ নেতাদের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতেই এমন পরিকল্পনা অনুসরন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।

উপনির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রয় শুরু হয়েছে। আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রয় করা হবে। ২৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও মনোনয়ন সংক্রান্ত বোর্ডের বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। বোর্ডের সভাপতি হিসেবে থাকছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অনুপ্রবেশকারীর আচরন, তাদের দুর্নীতি এবং অপকর্মের কারণে মনোনয়ন সংক্রান্ত সংসদীয় বোর্ড মনোনয়নের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নেবে। অনেক যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে এই মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল ৫টি মূল বিষয় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে :

১০ বছর বা বেশি সময় আওয়ামী লীগ করতে হবে
হুট করে দলে আসা কেউ এবার মনোনয়ন পাবেন না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংক্রান্ত বোর্ডের একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোভাব খুব সুস্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে, যারা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কেবল তারাই মনোনয়নের জন্য বিবেচিত হবে। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় রয়েছে অর্থাৎ সাড়ে এগারো বছরে বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে অনেকেই নানা রকম সুবিধা পাওয়ার আশায় এবং অপকর্ম করার জন্য দুরভিসন্ধিমূলকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এদেরই সব চাইতে বেশি টার্গেট থাকে মনোনয়ন প্রাপ্তির। আর এই কারণেই এবার মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দেয়া হচ্ছে। যারা ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ করেনি তাদেরকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হবে।

অতীত ভুমিকা
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের পর ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলা এবং ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের সময়ের ভূমিকা ছাড়াও অতীতে মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তির ভূমিকা কি তা মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে। এই সময়কালগুলোই আসলে একজন ত্যাগী পরীক্ষিত কর্মীকে চিহ্নিত করার সব চাইতে ভালো সময় বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। কাজেই এই সময়গুলোতে তাদের ভুমিকা পর্যালোচনা করা হবে মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে। এই সময়গুলোতে যাদের অবদান বেশি তারা মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।

দলের জন্য অবদান
মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তিটি দলের জন্য কি অবদান রেখেছেন? দলকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে, দলকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তার সুনির্দিষ্ট ভূমিকা মনোনয়ন বোর্ড বিবেচনা করবে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে।

ফৌজদারি অপরাধ
এবার যে বিষয়টি মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে দেখা হবে তা হলো, মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তিটির বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা আছে কিনা। মামলা থাকলে কোন আমলে হয়েছে, কখন ও কি ধরণের অভিযোগ রয়েছে? ২০০৮ এর পর তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজী, হত্যা বা কোন রকম ফৌজদারি অপরাধ থাকলে তিনি মনোনয়ন দৌড়ে অনিবার্যভাবে পিছিয়ে পড়বেন। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, ক্লিন ইমেজের প্রার্থী, যার বিরুদ্ধে কোনরকম ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ নেই, তাকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

দুর্নীতির অভিযোগ
সাম্প্রতিক সময় আওয়ামী লীগের কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ত্রানের অর্থ আত্মসাৎ, টেন্ডারে অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্যের মতো অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে তারা মনোনয়ন দৌড়ে পিছিয়ে পড়বেন।

দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এই ধরনের ব্যক্তিদেরকেও এবার মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র গুলো নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে এই পাঁচটি বিষয় বিবেচনা করেই সংসদীয় পাঁচটি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

এসকে