• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ১২:৪৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ১২:৫৮ পিএম

‘গৃহহীনদের ঘর মুজিব বর্ষের বড় উৎসব’

‘গৃহহীনদের ঘর মুজিব বর্ষের বড় উৎসব’

গৃহহীন পরিবারকে ঘর ও জমি প্রদান মুজিব বর্ষের সবচেয়ে বড় উৎসব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় নীলফামারীর সৈয়দপুর, খুলনার ডুমুরিয়া, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের উপকারভোগীরাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আমাদের লক্ষ্য ছিল এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ, গরিব মানুষ, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পড়ে থাকা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। বাংলাদেশকে দ্রারিদ্র্যমুক্ত করা। সেই লক্ষ্যে আমরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা দেওয়া শুরু করলাম। কমিউনিটি ক্লিনিক করে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে বিনা পয়সায় ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম। ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করলাম।”

শেখ হাসিনা আরো বলেন, “আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসঙ্গে পালন করছি। মুজিব বর্ষে আমাদের লক্ষ্য একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না, গৃহহারা থাকবে না। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর একমাত্র লক্ষ্য।”

সরকারপ্রধান আরো বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব স্থবির। আজকে আমাকে গণভবনে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে হচ্ছে, আপনাদের ঘরগুলো দিতে হচ্ছে। আমার খুব আকাঙ্ক্ষা ছিল, নিজে দাঁড়িয়ে আপনাদের হাতে জমির দলিল তুলে দিই। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সেটা পারলাম না।”

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “বেদে শ্রেণিকে আমরা ঘর করে দিয়ে বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছি। হিজড়াদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দলিত ও হরিজন শ্রেণির জন্য উচ্চমানের ফ্ল্যাট তৈরি করে দিচ্ছি। এভাবে প্রত্যেকটা শ্রেণির মানুষের জন্য আমারা কাজ করে যাচ্ছি। যাতে সবাই মানসম্মত ও সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে দেশের ভূমি ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২ পরিবারকে ঘর ও জমি দেওয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। 

আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৫২ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। 

ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিতকল্পে ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে।

এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২০ সালের জুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে।  

প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবারের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সেমিপাকা বাড়ি। প্রতিটি বাড়িতে থাকছে দুটি শোবার ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি ইউটিলিটি রুম, একটি করে বারান্দা ও টয়লেট। ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি ছাড়াও প্রতিটি ঘরে থাকবে ভূমিকম্প রোধক ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন