• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ১১:৪৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ০২:৩৩ পিএম

পিলখানায় নিহতদের সমাধিতে শ্রদ্ধা

পিলখানায় নিহতদের সমাধিতে শ্রদ্ধা

রাজধানীর পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবির মহাপরিচালক এবং নিহত কর্মকর্তাদের স্বজনরাও শ্রদ্ধা জানান। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা শহীদদের প্রতি স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলেন।

এ সময় বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারিগরদের চিহ্নিত করতে ও ঘটনা নিয়ে জনমনের বিভ্রান্তি দূর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, "পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। সরকারের উচিত সেই বিভ্রান্তি দূর করা।"

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, "এই হত্যাকাণ্ডে সুবিধাভোগী কারা তা জাতি জানতে চায়।"

এদিকে নিহতদের স্মরণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সব সেক্টর, প্রতিষ্ঠান এবং ইউনিটে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। শোক প্রকাশে বিজিবি সদস্যরা কালো ব্যাজও পরেছেন।

এদিকে বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং পিলখানার বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। বিজিবির কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদদের আত্মীয়স্বজন, পিলখানায় কর্মরত কর্মকর্তারা এতে অংশ নেবেন।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় দিনগুলোর একটি হচ্ছে পিলখানার এই হত্যাকাণ্ড। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এতে প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন। বিডিআর বিদ্রোহে হত্যার দায়ে মোট ৫৮টি মামলা করা হয়েছে। মামলায় বিডিআরের ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন, ২৭৮ জনকে খালাস দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত।

২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হন ১৮৫ জন আর ২০০ জনকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পেয়েছেন ৪৫ জন।

২০২০ সালের ১৩ জানুযারি ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্র ও আসামি উভয় পক্ষ।

হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্ণ হলেও আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহে হত্যার দায়ে করা মামলাটি। তবে সময় সাপেক্ষ হলেও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।