বুধবার থেকে শুরু হয়েছে আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউন। এ সময়টাতে (১৪ থেকে ২১ এপ্রিল) সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনে পুলিশের সব ইউনিটপ্রধানকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধ এবং পবিত্র রমজান উপলক্ষে সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ নির্দেশনা প্রদান করেন আইজিপি। 

বুধবার (১৪ এপ্রিল) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স) মো. সো‌হেল রানার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

আইজিপি বলেন, “সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালে বিনা প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে যা‌বেন না। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে পুলিশের মুভমেন্ট পাস নিয়ে চলাচল করবেন। জরুরি কাজে ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।” 

এ সময় বেনজীর আহমেদ ধৈর্য ধরে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সরকারি বিধিনিষেধ প্রতিপালনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি খাদ্যপণ্য, ওষুধ, উৎপাদন সামগ্রী ও অন্যান্য জরুরি সেবার যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করার কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোভিড-১৯ সংক্রমণ, লকডাউন, রমজান উপলক্ষে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট না করতে পারে তা নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

বেনজীর আহমেদ জানান, বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকরা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, রমজানে মহাসড়কে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না। 

বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, “পবিত্র রমজান মাসে জুমা ও ওয়াক্তের নামাজের সময় মসজিদের ভেতরে বা বাইরে কোনো জমায়েত এবং ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। রমজান উপলক্ষে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম প্রতিহত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে।”

আইজিপি বলেন, “আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনেক মানুষ ঢাকা ও অন্যান্য শহর ছেড়ে গ্রামে বাড়ি যে‌তে পা‌রেন, সে সময় তাদের বাসাবাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় রেলস্টেশন, লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের ভিড় বাড়তে পারে। জনশৃঙ্খলা রক্ষায় এসব স্থানে পুলিশি টহল বাড়াতে হবে।”

রমজানে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন আইজিপি।