• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২১, ০৪:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৮, ২০২১, ০৪:৪৮ পিএম

জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমার শঙ্কা: এডিবি

জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমার শঙ্কা: এডিবি

করোনা মহামারি পরিস্থিতির অবনতি ও লকডাউনে বিধিনিষেধের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমবে বলে জানিয়েছেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) অর্থনৈতিক অবস্থার হালনাগাদ তথ্যের কথা জানিয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, "রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও অন্যান্য সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত রয়েছে। তবে মহামারি পরিস্থিতির অবনতি ও লকডাউনের বিধিনিষেধের চলমান থাকলে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ ৬.৮ শতাংশ থেকে অন্তত এক শতাংশ পয়েন্ট কমে যেতে পারে।”  

মহামারির প্রথম ধাক্কায় দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের মধ্যে প্রবৃদ্ধির দিক থেকে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে ধাক্কায় প্রবৃদ্ধির পয়েন্ট কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এডিবি।

এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সুফলের কারণে বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ৬.৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পেতে পারে। 

মানমোহন প্রকাশ বলেন, "প্রণোদনামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং নীতি সুফল দেওয়ায় ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর প্রথম ধাক্কা বাংলাদেশ সরকার ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছে। সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার, বেসরকারি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যবসা করার ব্যয় কমিয়ে আনা, রপ্তানি বহুমুখী করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে আরও কাজ করার সুযোগ এনে দিয়েছে।”

২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসে, যা আগের অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।

এডিবি বলছে, "বিশ্ব অর্থনীতির টেকসই পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানির গতি, প্রণোদনার বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপরই প্রবৃদ্ধির বিষয়টি নির্ভর করবে।"

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও মহামারির বাস্তবতায় পরে তা ৭.৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।

এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর গতি যতটা হবে বলে আগে ভাবা হয়েছিল, এ বছর তার চেয়ে বেশি হবে বলেই এডিবির ধারণা। 

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ধীরে ধীরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ধারায় ফিরবে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া হবে সবচেয়ে দ্রুত। ২০২০ সালে যেখানে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল, এবার তা ৯.৫ শতাংশ হারে বাড়বে।"

এডিবি প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নতুন করে বাড়লে, টিকাদানের গতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ানো না গেলে এর প্রভাব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর পড়বে।

করোনা টিকা নিশ্চিতের বিষয়ে মনমোহন প্রকাশ বলেন, "টিকা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের জন্য ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের আর্থিক সহায়তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ অর্থ দিয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত করোনা টিকা কিনতে পারবে সরকার। এছাড়াও টিকা পরিবহণ, প্রয়োগ ও সংরক্ষণসহ টিকা ব্যবস্থাপনার উন্নয়নেও এ অর্থ ব্যয় করা যাবে।"

মনমোহন প্রকাশ আরও বলেন, "দীর্ঘমেয়াদে সংকট দূর করতে এডিবি চায় বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদন হোক। বিশ্বের অন্যদেশের সঙ্গে দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে টিকা উৎপাদন করতে চাইলে সেক্ষেত্রেও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।"