• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২১, ১১:৫৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৩০, ২০২১, ১২:২৯ পিএম

ফের বাড়ল তেলের দাম, স্বস্তি চাল-মুরগিতে

ফের বাড়ল তেলের দাম, স্বস্তি চাল-মুরগিতে

গত কয়েক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকা ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে আরও এক দফা। সরকারের যথাযথ তদারকি না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, এর জন্য দায়ী মিল ও কোম্পানিগুলো। এদিকে বেশ কয়েক মাস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দাম কমতে শুরু করেছে চাল ও মুরগির।

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। অথচ চলতি বছরের শুরুতেও এই তেলের দাম ১০০ টাকা কম ছিল, যা দফায় দফায় বেড়ে গত সপ্তাহে এসে দাঁড়ায় ৬৪০ টাকায়।

এছাড়া বর্তমানে পুষ্টি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৪০ টাকা, তীর ৬৪০ টাকা এবং বসুন্ধরা ৬৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি ব্র্যান্ডের তেলেই বেড়েছে ১০ টাকা এবং মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১০০ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়েনি খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা এবং পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা।

প্রতিনিয়ত দাম বাড়তে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্রেতারা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা মঞ্জুরুল বলেন, “এই দেশে সবকিছুর দাম বাড়ে, কিন্তু কমে না। সরকারের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী দাম বাড়ান। এতে হিমশিম খেতে হয় আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের। সরকার ঠিকমতো বাজার মনিটরিং করলে সবকিছুর দামই ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকত।”

দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, “কেন দাম বাড়ছে তা আমরা জানি না। এটা মিল মালিক ও কোম্পানিগুলো জানে। তারা যে দামে আমাদের কাছে বিক্রি করে, আমরা সেই দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। কোম্পানিগুলো ৫০ টাকা কম দিলে, আমরাও ৫০ টাকা কম বিক্রি করতে পারি।”

এদিকে বেশ কয়েক মাস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দাম কমতে শুরু করেছে চালের। গত সপ্তাহে ৬২ থেকে ৬৩ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মিনিকেট এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়, ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা বিক্রি হওয়া নাজিরশাইল বক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা বিক্রি হওয়া আটাশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ তেকে ৪৬ টাকা।

এছাড়া স্বর্ণা (গুটি) বিক্রি হচ্ছে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা। গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে ৪৭ টাকা দরে বিক্রি হওয়া স্বর্ণা (পাইজাম) এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়।

মেসের সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছেন বৃন্দাবন ও জয় বসাক। দুজনেই চাকরি প্রত্যাশী। তারা বলেন, “চাল-তেল সবকিছুর দাম বাড়তি। আমাদের এমনিতেই কোনো আয় নেই। তার ওপর লকডাউনে এমন দাম বাড়তে থাকলে আমরা কোথায় যাব। বেশ কয়েক মাস ধরে বাড়তি থাকার পর চালের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এটাও আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের জন্য অনেক বেশি। দাম আরও কমলে সবার জন্য সহনীয় হবে।”

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নতুন চাল উঠতে শুরু করেছে। তাই দামও কমতে শুরু করেছে। ঈদের পর চালের দাম একেবারে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।

গত সপ্তাহের তুলনায় আরও এক দফা কমেছে মুরগির দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৪০ টাকা, সোনালি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, সাদা কক বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, হাঁস পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, কবুতর পিস ১৪০ টাকা।

এছাড়া মানভেদে করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটোল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাকরোল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৬০ টাকা, মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, সজনে ১২০ টাকা, মানকচু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর মুখী ১০০ টাকা, লাল আলু ৩০ টাকা এবং বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, কুমড়ার ৩০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ ২৫ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা ও লেবু ১৫ থেকে ৪০ টাকা।

আগের মতোই প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ টাকা, আলু ২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা, দেশি আদা ৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গরমের কারণে দাম কমেছে হাঁসের ডিমের। বর্তমানে প্রতি হালি হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা এবং মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা।