• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২১, ১১:৩৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১১, ২০২১, ১২:৩৩ পিএম

লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম

লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় ফের দাম বেড়েছে চাল, তেল, ডিম, মুরগি ও শাকসবজির। তবে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম।

শুক্রবার (১১ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে বাজার করতে এসেছেন বহু ক্রেতা। প্রতিনিয়ত নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় তাদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে দাম বাড়ার জন্য নানা অজুহাত দেখিয়েছেন বিক্রেতারা।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪৬ টাকা, স্বর্ণা (পাইজাম) ৪৮ টাকা ও আটাশ ৪৬ টাকা। অথচ গত সপ্তাহে মিনিকেট বিক্রি হয়েছিল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৪৫ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪২ টাকা, স্বর্ণা (পাইজাম) ৪৬ টাকা ও আটাশ ৪৬ টাকা।

চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মোশাররফ নামের এক বিক্রেতা বলেন, “দাম কেন বাড়ছে, বলতে পারছি না। মিলাররা বলছে, ধানের দাম বেশি, তাই চালের দাম বেশি। আমরা তো মিল থেকে চাল কিনে আনি। তাই সেখানে দাম বাড়লে আমাদেরও বাড়াতে হয়।”

এই বিক্রেতা আরও বলেন, “এবার যে ধান উঠছে, এতে দাম অনেক কমার কথা। উল্টো দাম বাড়ছে।”

শুধু চাল নয়, লাগামহীনভাবে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। গত সপ্তাহে ৬৯০ টাকা বিক্রি হওয়া রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৭১০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬৭০ টাকা বিক্রি হওয়া পুষ্টি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা। এছাড়া তীর, বসুন্ধরা ও সেনা ব্র্যান্ডের তেল বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা। গত সপ্তাহে এসব ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৬৭০, ৬৮০ ও ৬৬০ টাকা।

তবে খোলা সয়াবিন ও পাম আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১২২ টাকা এবং পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা।

তেলের দাম বাড়ার বিষয়ে বিক্রেতারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারেও বেড়েছে। সামনে আরও বাড়তে পারে। তবে কোম্পানিগুলো যদি কম দামে তেলে বিক্রি করে তাহলে তারাও কম দামেই বিক্রি করতে পারবেন।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, সোনালি ২৪০ টাকা, কক ২৩০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৩০ টাকা, সোনালি ২২০ টাকা, কক ২২০ টাকা, লেয়ার ১৮০ টাকা।

দাম বেড়েছে ডিমেরও। হালিতে দুই টাকা বেড়ে বর্তমানে মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা। তবে হাঁসের ডিম আগের মতোই ৪০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেক ক্রেতা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ইসমাইল হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, “দিন দিন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, কিন্তু বেতন বাড়ছে না। জীবনটা দিন দিন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।”

মশিউর রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “নানা অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। একবার কিছুর দাম বাড়লে সেটি আর কমে না। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই। যত জ্বালা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের।”

কিছুটা লাগামহীন শাকসবজির বাজারও। বর্তমানে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৯০ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ১০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা।

এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, কলা ২০ টাকা, লাউ পিস ৬০ টাকা। তবে কমেছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১২০ টাকা, দেশি আদা ১০০ টাকা।