• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২১, ০৮:৪৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১১, ২০২১, ০৩:১১ এএম

ছড়াকার এনায়েত হোসেন আর নেই

ছড়াকার এনায়েত হোসেন আর নেই
কবি এনায়েত হোসেন। ফাইল ফটো।

ছড়াকার এনায়েত হোসেন আজ শনিবার ভোর ৪টা ৩০মিনিটে ফরিদপুর শহরের রেজওয়ান মোল্লা জেনারেল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী, ৩ পুত্র, ২ কন্যা, নাতি-নাতনীসহ  অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতা ও করোনা আক্রান্ত হলে কবিকে প্রথমে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (বিএসএমএমসিএইচ) -এর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা করা হয়। প্রায় দু'সপ্তাহ চিকিৎসার পর তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাঁকে হাসপাতাল থেকে বায়তুল আমানস্থ কবির অস্থায়ী বাসভবনে (কবি এনায়েত হোসেন সড়ক) স্বেছায়  নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা।

এ বাড়িতে  অবস্থান কালে একদিন বাদেই তিনি আবারো গুরুতর অসুস্থ হয়ে যান। পরবর্তীতে তাঁকে গত বুধবার  রাত ২টায় রেজওয়ান মোল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ শনিবার ভোরে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 

কবির প্রয়াণে দেশ-বিদেশের সাহিত্যপ্রেমী, শিক্ষাবিদ,  বিশিষ্ট গুণীজন, স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যাক্তিবর্গ ইতোমধ্যে গভীর শোক জ্ঞাপন করেছেন।  তাঁরা কবির শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন কবির প্রতিষ্ঠিত 'পদ্মাপাড় লোক সাংস্কৃতিক সংস্থা' এর সভাপতি হারুনার রশিদ।

কর্মজীবনে তিনি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাব সহকারী ছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি অবসরে যান।

তাঁর পারিবারিক নাম এনায়েত হোসেন মৃধা। তিনি ১৯৪৫ সালের ১লা মার্চ ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের নর্থ চ্যানেল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম বাছের মৃধা,মাতা সাজেদা খাতুন সাজু।

কৈশর জীবন থেকেই লিখতেন ছড়া। তাঁর ছড়ায় আছে আবেশময়ী এক যাদুকরী ছন্দ। মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা, প্রিয় বন্ধুদের স্মরণে লিখেছেন তিনি অসংখ্য ছড়া ও কবিতা। শোষণ,বঞ্চনা, অন্যায় ও অসংগতির বিরুদ্ধে ব্যঙ্গময় হয়েছে তাঁর লেখনি । লিখেছেন স্যাটায়ার ( Satire), শিশুতোষ ও জীবনীগ্রন্থ। 

১৯৭৯ সালে তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই 'পালাবদলের ছড়া' প্রকাশিত হয়। তারপর তাঁর নাম হয়ে যায় 'পালা বদলের কবি'।

তাঁর অন্যান্য গ্রন্থসমূহ হলো- 'কচি কলিদের ছড়া', 'চোখের জলে আগুন জ্বলে',' প্রতিবাদী ছড়া ও ভাব সংগীত', 'ছোটদের জসীম উদদীন',
'শ্রেষ্ঠ ছড়া', 'সুখের পাখি এবং রাজাপুর'।

সাদামাটা ব্যাক্তিত্ব ও কবিতার নান্দনিকতা তাঁকে  এনে দিয়েছে সাহিত্যপ্রেমী ও সাধারণের ভূয়সী প্রশংসা। নানা সম্মাননা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক 'সাদা মনের মানুষ' সম্মাননায় ভূষিত হন কবি। 'নকশী কাঁথা সাহিত্য পুরস্কার' পান ২০০৯ সালে। ২০১৩ সালে পান 'সাংবাদিক গৌতম স্মৃতি পুরস্কার' এবং  কবি 'জসীম উদ্দীন স্বর্ণপদক' পান ২০১৯ সালে।

 


জাগরণ/এসকেএইচ