• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২১, ০৫:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৪, ২০২১, ১১:১২ পিএম

রূপগঞ্জ ট্রাজেডি

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে একহাত নিলেন হাইকোর্ট

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে একহাত নিলেন হাইকোর্ট

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের (সেজান জুস) কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর ভূমিকা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। 

আদালত বলেছেন, এতজন শ্রমিক মারা গেলেন, এফবিসিসিআইসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো কোনো শোক জানালো না। শোক জানিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কোনো বিবৃতি চোখে পড়ল না। তাদের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নাই। তারা আছেন শুধু সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় আর ব্যাংকের ঋণ লোন কীভাবে মওকুফ পাওয়া যায় সে চেষ্টায়।

বুধবার (১৪ জুলাই) আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের বিষয়টি নজরে আনলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। 

আদালত বলেন, এতজন শ্রমিক মারা গেলেন। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক জানিয়ে কোনো বিবৃতি দেখি নাই। এফবিসিসিআই শ্রমিকদের মৃত্যুর বিষয়ে শোক জানাল না। তাদের কোনো প্রতিনিধি দল সেখানে গেল না। আমার মনে হয় এফবিসিসিআইসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর রোল প্লে করার প্রয়োজন এসব ক্ষেত্রে। ঠিকমত ফ্যাক্টরিগুলো রান করছে কি না। কোথায় কী দুর্বলতা এগুলো তাদের দেখা উচিত। গার্মেন্টের ব্যাপারে বিদেশিরা চাপ দিয়েছে বলে সেখানে এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কারণ আমাদের দেশে যতক্ষণ চাপ না দিচ্ছেন ততক্ষণ কাজ হয় না। এটা বোঝা উচিত। 

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি পত্রপত্রিকা ফলো করার চেষ্টা করি। তাদের কোনো পজিটিভ ভূমিকা দেখি না। আমার মনে হয় যে আমাদের এই জায়গাগুলোতে কাজ করার সুযোগ আছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা শুধু সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা করে আর ব্যাংকের ঋণ লোন মওকুফ কীভাবে পাওয়া যাবে সেই চেষ্টায় থাকে। আর কারখানা পরিদর্শকরা পরিদর্শনে গিয়ে খাম নিয়ে আসেন।

আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন,  শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার জন্য ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যে দায়বদ্ধতা আমার মনে হয় এসব জায়গায় আপনাদের কাজ করার সুযোগ আছে। এসময় ব্যারিস্টার অনিক আর হক শুনানিতে অংশ নেন।
 
এর আগে গত ১০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা ও আহতদের ৩৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি রিট আবেদনটি করে।

গত ১১ জুলাই রিটের শুনানিতে আদালত বলেছিলেন, আগুনে পুড়ে ৫২ জন নিহতের ঘটনায় সারাদেশের মানুষের মতো আমরাও উদ্বিগ্ন। এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই মামলা হয়েছে ও আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু টাকা অনুদানও দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দিচ্ছি না। আগে লাশগুলো শনাক্ত হোক। এরপর আপনারা ক্ষতিপূরণের আবেদন নিয়ে আসুন। আদালতের দরজা সবসময় খোলা আছে।

জাগরণ/এমএইচ