• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২১, ০১:৪৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২০, ২০২১, ০১:৪৯ এএম

মোহাম্মদপুর মাদ্রাসা মামুনুল হক পরিবারের দখলমুক্ত

মোহাম্মদপুর মাদ্রাসা মামুনুল হক পরিবারের দখলমুক্ত
জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ● ফাইল ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঐতিহ্যবাহী জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা মামুনুল হক পরিবারের দখল থেকে মুক্ত হয়েছে।

সোমবার (১৯ জুলাই) বিকেলে ঢাকা জেলা পরিষদ অভিযান চালিয়ে ওয়াকফ এস্টেটের কমিটির কাছে মাদ্রাসা ভবনের দখল বুঝিয়ে দেয়। এর আগে সকালে মামুনুল হকের বড় ভাই মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল হক ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে চলে যান।

দখল বুঝিয়ে দিয়ে ঢাকা জেলা পরিষদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আওয়াল বলেন, আদালত ওয়াকফ এস্টেটের কমিটির পক্ষে রায় দিয়েছেন। মাদ্রাসা ও মসজিদ ওয়াকফ সম্পতি। মামলা চলমান থাকায় একটি পক্ষ মাদ্রাসা দখল করেছিল। তারা দখল ছেড়েছে। আদালত যাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন, তাদের দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে কমিটির সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আশির দশকে প্রয়াত শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রাজনৈতিক মতবিরোধে লালবাগ মাদ্রাসা ছাড়েন। যোগ দেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী এবং নূর হোসেনের দান করা ১৬ কাঠা জমিতে প্রতিষ্ঠিত মোহাম্মদপুর মাদ্রাসায়। ১৯৯২ সালে তাকে মাদ্রাসার মুহতামিম তথা অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীকালে তিনি রাজনৈতিক খেলাফত মজলিশ প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জড়ানোর অভিযোগে তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নানা ঘটনাপ্রবাহের পর ২০০০ সালে মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকেও অবসরে পাঠানো হয় আজিজুল হককে। তার দুই ছেলের মধ্যে মাহফুজুল হক তখন মাদ্রাসাটির শিক্ষক এবং মামুনুল হক শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদেরও মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসার পর মাদ্রাসার দখল নেন আজিজুল হক। ওয়াকফ এস্টেট অনুমোদিত মাদ্রাসা কমিটি বিলুপ্ত করে একটি পরিচালানা পর্ষদ গঠন করেন তিনি। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায় কমিটি। তাদের পক্ষে রায় দেন আদালত। কিন্ত তার এক যুগ পরেও দখল বুঝে পায়নি কমিটি।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে গতবছরের শেষ দিকে আলোচনায় আসেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হক। গত মার্চে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের কর্মসূচিগুলোর অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। গত এপ্রিলে সহিংসতাসহ নানা মামলায় গ্রেফতারের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন মামুনুল।

এরপর থেকেই তার পরিবারের দখলমুক্ত করে আদালতের রায় অনুযায়ী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ কমিটির হাতে তুলে দেয়ার তৎপরতা জোর পায়। মামুনুল হকও এ মাদ্রাসার শিক্ষক। তাকে এ মাদ্রাসা থেকেই গ্রেফতার করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আওয়াল বলেন, মাদ্রাসার প্রধান ফটক তালাবদ্ধ ছিল। তালা ভেঙে প্রবেশের পর ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নিয়ন্ত্রণ বুঝে পাওয়ার পর কমিটির সভাপতি ব্যবসায়ী আবদুর রহীম বলেন, ২০ বছর আইনি লড়াইয়ের পর আমরা মাদ্রাসা ফিরে পেয়েছি। এখন থেকে মাদ্রাসায় রাজনীতি থাকবে না। শুধু শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। যাকে অব্যাহতি দিয়ে মাদ্রাসা দখল নিয়েছিলেন আজিজুল হক; সেই মাওলানা হিফজুর রহমানই অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন।

জাগরণ/এসএসকে