কোরবানির মর্মার্থ অনুধাবন করে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে করোনাভাইসার (কোভিড-১৯) মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

একই সঙ্গে করোনার অমানিশার আঁধার কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এ অবস্থায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

বুধবার (২১ জুলাই) ঈদুল আজহার দিন সকালে বঙ্গভবন থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, রাতের আঁধার শেষেই ঝলমলে রোদের আলোতে ভরে উঠে পৃথিবী। করোনার অমানিশার আঁধারও সহসাই কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাবে আমাদের দেশ। কিন্তু এর জন্য দরকার সকলকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।

তিনি বলেন, কিন্তু এর জন্য দরকার সবাইকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। অর্থাৎ, সঠিকভাবে মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা।

মহামারি পরিস্থিতির ক্রমাবনতির মধ্যে টিকাদান কর্মসূচি সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হলেও এখন তা পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপ্রধান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের সব নাগরিকের জন্য টিকাদান নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তাই এ কর্মসূচিকে সফল করতে সরকারের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। কোভিডের কারণ এমন এক ভাইরাস, যা থেকে ইচ্ছে করলেই কোনও ব্যক্তি বা পরিবার বা এককভাবে একটি দেশের পক্ষে নিরাপদ থাকা সম্ভব নয়।

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। তাই বিশ্বকে করোনার হাত থেকে বাঁচাতে হলে উন্নত-অনুন্নত ও ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে বহুজাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনের হলওয়েতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবারের সদস্য ও বঙ্গভবনের অতিপ্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ঈদের নামাজ পড়েন রাষ্ট্রপতি। পরে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে ভিডিও বার্তা দেন।

করোনাভাইরাসের কারণে গতবছরের মতো এবারো ঈদের দিন বঙ্গভবনে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বাদ দেয়া হয়েছে।

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। এবার মুসলিম বিশ্ব এমন একটা সময়ে ঈদ-উল-আজহা উদযাপন করছে যখন করোনার ভয়াল থাবায় গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত।তিনি বলেন, বাংলাদেশেও করোনার নেতিবাচক প্রভাব ক্রমান্বয়ে প্রকট হচ্ছে।

করোনার কারণে দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জীবন বাঁচানো প্রথম অগ্রাধিকার হলেও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জীবিকার গুরুত্বও অনস্বীকার্য।

তিনি বলেন, অসচ্ছল ও নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবেও বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

জাগরণ/এসএসকে/এমএ