• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০১৯, ০৯:৪৩ এএম

মধ্যপাড়া পাথর খনিতে উৎপাদন বেশি বিক্রি কম

মধ্যপাড়া পাথর খনিতে উৎপাদন বেশি বিক্রি কম
দিনাজপুরের পার্বতীপুর মধ্যপাড়া পাথর খনি

 

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে তিন শিফটে মাসিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে গত বছরে ১১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬৬ টন পাথর উত্তোলন করেছে খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। তবে পাথর উত্তোলন বাড়লেও আশানুরুপ বিক্রি হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাথর বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ২২ টন। গত সোমবার পর্যন্ত খনির ১১টি ইয়ার্ডে বিভিন্ন সাইজের পাথর মজুদের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার টন। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে পাথর বিক্রি হয়েছিল প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত পাথর বিক্রি হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

খনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জিটিসি প্রতিদিন পাথর উৎপাদন করছে প্রায় পাঁচ হাজার টন। বিক্রিও বাড়ছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ খনি কর্তৃপক্ষকে পাথর পরিবহনে লোড নির্ধারন করে দিয়েছে। ফলে এখন অতিরিক্ত পাথর বহনের অনুমিত পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া পরিবহন খরচ বেড়েছে। আমদানীকৃত পাথর ওভার লোড (অতিরিক্ত) নিয়ে পরিবহন করতে পারছে পাথর ব্যবসায়ীরা। এতে তাদের পরিবহন খরচ কমে যাচ্ছে। এ কারনে ব্যবসায়ীরা খনির পাথর কেনার চেয়ে আমদানী করা পাথরের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।

খনির উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উৎপাদন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) খনির দায়িত্বভার গ্রহন করে খনির নতুন স্টোপ নির্মাণ (শিলা উৎপাদন ইউনিট) খনির উন্নয়ন এবং উৎপাদনের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রতিদিন তিন শিফটে পাথর উত্তোলন করছে। জিটিসি মাসিক ১ লাখ ২০ হাজার টন পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত বছরের ২৩ মার্চ থেকে খনির ৯নং স্টোপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জ্বালানী ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জনাব নসরুল হামিদ বিপু এমপি।

               মধ্যপাড়া খনিতে উৎপাদনের চেয়ে কম পাথর বিক্রি হওয়ায় খনি ইয়ার্ডে স্তুপ জমে আছে

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসির) নির্বাহী পরিচালক জাবেদ সিদ্দিকী জানান, খনিতে অর্ধশতাধিক বিদেশী খনি বিশেষজ্ঞ, সাত শতাধিক খনি শ্রমিক, অর্ধশত দেশি প্রকৌশলীসহ দেড় শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী কাজ করছেন। মাসিক পাথর উৎপাদন লক্ষমাত্রায় পৌছানোর ফলে জিটিসির কর্মরত খনি শ্রমিকদের প্রতিমাসে বেতন ও ওভার টাইমের সঙ্গে উৎপাদন বোনাসও প্রদান করা হচ্ছে।

২০০৭ সালের ২০ মে মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে দৈনিক তিন শিফটে ৫ হাজার ৫০০ টন পাথর উত্তোলনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে এর বানিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। ওই সময় মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) পাথর উত্তোলন করে। কিন্তু তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রায় সাত বছর ধরে তিন শিফটে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ফলে কোম্পানিটি লোকশানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। খনিটিও বন্ধের উপক্রম হয়। এরপর গত ২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সরকারের সঙ্গে জিটিসির ৬ বছর মেয়াদে খনি থেকে পাথর উত্তোলন ও রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তি হয়।

এ বিষয়ে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) যাবেদ চৌধুরী জানান, এখন উৎপাদন ভালো হচ্ছে। কিন্তু বিক্রি আশানুরুপ হচ্ছে না। তবে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে আমাদের পাথরের চাহিদা ও বিক্রি বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে সরকারের নিয়ম অনুয়ায়ী লোড ক্যাপাসিটি ফলো করা হচ্ছে।

এসসি/