• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২১, ১২:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৫, ২০২১, ০৬:৩৬ পিএম

কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে ভয়াবহ অর্থ কেলেঙ্কারি

কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে ভয়াবহ অর্থ কেলেঙ্কারি
কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন অফিস। ফাইল ফটো।

কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন বাংলাদেশের ভিসা প্রসেসিংএর জন্যে একটি প্রাইভেট এজেন্সিরকে দায়িত্ব দিচ্ছে এবং সেই এজেন্সিকে কাজ পাইয়ে দিয়ে বিরাট অঙ্কের ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সেখানে নিযুক্ত ডেপুটি  হাই কমিশনার তৌফিক আহমেদের বিরুদ্ধে।  

জানা যায়, আগামী ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বিজয় দিবসের দিনে এটির উদ্বোধন করা হবে।  

যে কোম্পানিকে কলকাতার ডেপুটি হাই কমিশন ভিসা প্রসেসিং এর দায়িত্ব দিতে চলেছে এটি একটি ভুঁইফোড় কোম্পানি। দিল্লির এই সংস্থার এ ধরনের কাজের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতাই নেই, নেই লোকবল বা পরিকাঠামোও। অথচ মাত্র ১ লক্ষ টাকা মূলধন বিনিয়োগ করে ৮ মাস আগেই কাজ শুরু করে দিয়েছে তারা।

বিশেষ কূটনীতিক সূত্রের খবর, বিনা টেন্ডারে এই সংস্থাকে বাছাইয়ের জন্য কলকাতায় নিযুক্ত ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক আহমেদ ১৫ কোটি টাকা উৎকোচ নিচ্ছেন। এর মধ্যে পাঁচ কোটি তিনি ইতিমধ্যেই নিয়েছেন এবং চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে যাওয়ার পর নেবেন বাকি ১০ কোটি।

এমন প্রশ্নও জোরেশোরে উঠেছে যে, এক লক্ষ টাকা যে কোম্পানির paid-up ক্যাপিটাল, কোন হিসেবে তাদের প্রায় ৯০ কোটি টাকার কাজ দেয়া হয়!  

প্রসঙ্গত, করোনাকালের আগে কয়েক বছরে কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশন অফিস বছরে এক লক্ষ কুড়ি হাজার ভিসা প্রদান করেছে। প্রতি ভিসার জন্য নতুন এই কোম্পানিটি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা প্রসেসিং ফি আদায় করবে যার পরিমাণ প্রায় ৯০ কোটি টাকা বছরে। 

ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে নতুন কোম্পানিকে দিয়ে প্রসেসিং শুরু করাতে উঠে পড়ে লেগেছেন তৌফিক সাহেব। এর পেছনের কারণ কি তাহলে এটিই যে আগামী বছরের জানুয়ারিতে তাঁর বদলি এবং তার আগেই টাকাটা গুটিয়ে ফেলতে চান তিনি?- এমন সন্দেহও করছেন অনেকেই। 

এদিকে, চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই কোম্পানিটি ভিসা জমা নেয়ার জন্য কলকাতার বহু বাইরে সুদূর সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে একটি অফিস ভাড়া নিয়েছে। যেখানে ভিসার আবেদন জমা দিতে ও ভিসা নিতে যেতে মানুষকে চূড়ান্তভাবে নাকাল হতে হবে। কারণ কলকাতার বাইরে ওই এলাকায় গণপরিবহন একান্তই অপ্রতুল।

এই পদক্ষেপের ব্যাপারে কলকাতার কূটনৈতিক মিশন থেকে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে আরও জোরালো করার কথাই বলা হয়েছে। বিডিএইচসি সূত্রে জানা যায়, 'এই পদক্ষেপ কূটনৈতিক মিশনে আরও নিরাপত্তা বাড়াবে। প্রতিদিন শত শত লোক অফিসে ভিড় করে, একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তাকর্মীরের জন্য জন-সাধারণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। তাছাড়া, অন্যান্য কনসুলেটগুলির বেশিরভাগই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের আশেপাশে ভিড়ের অনুমতি দেয় না।' 

প্রসঙ্গত, কলকাতা অফিস ১৯৭১ সাল থেকে দেশের প্রথম বিদেশি মিশন এবং সেখানে ৫০ বছর ধরে ভিসা প্রদান করে আসছে। এর আগে অন্য কোনও কূটনৈতিক অফিস থেকে বাংলাদেশের ভিসা করাতে ভারতীয়দের অর্থ না লাগলেও, কলকাতা থেকে ভিসা করাতে প্রত্যেক ভারতীয়কে ৮০০ থেকে ৮৫০ রুপী করে ভিসা প্রসেসিং ফি বাবদ দিতে হবে এবার। বাড়তি অর্থ গুণে তারা পাবে দূরবর্তী স্থানে যাতায়াতের হেনস্থা।

 

এসকেএইচ//