• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১৭, ২০২২, ০৯:৫৬ পিএম

চট্টগ্রাম মহানগর আ‍‍`লীগ মাহতাব-নাছিরের ওপর আস্থা রাখল কেন্দ্র

চট্টগ্রাম মহানগর আ‍‍`লীগ মাহতাব-নাছিরের ওপর আস্থা রাখল কেন্দ্র
ছবি- জাগরণ।

চট্টগ্রাম ব্যুরো// 
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সম্মেলন স্বাভাবিকভাবে হবে। থানা সম্মেলনের কর্মকাণ্ড তদারকি করার জন্য নগর আওয়ামী লীগের সদস্যদের নিয়ে থানা পর্যায়ে একটি তদারকি কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রোববার ( ১৬ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

তিনি বলেন, ইউনিট সম্মেলন, ওয়ার্ড সম্মেলন স্বাভাবিকভাবেই চলবে। সম্মেলন কর্মকাণ্ড তদারকি করার জন্য নগর আওয়ামী লীগের সদস্যদের নিয়ে থানা পর্যায়ে একটি তদারকি কমিটি করা হবে। এ কমিটি ঠিক করবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির, সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেল।

বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ মাহমুদ আল স্বপন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ প্রমুখ।

এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে মৌখিকভাবে ওয়ার্ড সম্মেলন স্থগিত রাখতে বলেন। একই সঙ্গে ওয়ার্ডের ইউনিট সম্মেলন চলমান রাখতে বলা হয়।

কেন্দ্রের নির্দেশে ইতিমধ্যে ১০৬টি ইউনিটের সম্মেলন শেষ করেছে নগর আওয়ামী লীগ। ইউনিট ছাড়িয়ে ওয়ার্ড সম্মেলন করতে গেলে বাঁধে বিপত্তি। এরই মধ্যে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ও সম্মেলনের বৈধতার প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ‘নালিশ’ নিয়ে যান নগর আওয়ামী লীগের একাংশ। তবে নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের দাবি, ‘যারা প্রয়াত মহিউদ্দিন ভাই ও দানু ভাইয়ের কমিটি ভাঙতে চেয়েছিল, আজকে তারাই তৃণমূলের সম্মেলন ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে। দল নয়, মুজিব প্রেম নয়, ব্যক্তিস্বার্থের কূটকৌশলের কাছে দলীয় স্বকীয়তাকে বিক্রি করার পাঁয়তারা করছে তারা। ’

জানা গেছে, এর মধ্যে কেন্দ্রের নির্দেশে ওয়ার্ড কমিটি স্থগিত থাকলেও ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে ঘরোয়া পরিবেশে বাকি থাকা ২৩টি ইউনিট সম্মেলন শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে নগর আওয়ামী লীগ। গত ১২ জানুয়ারি নগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ইউনিট সম্মেলন শুরু করে নগর আওয়ামী লীগ। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে ইউনিট আছে। ইউনিটের পাশাপাশি ২৬ ডিসেম্বর থেকে ওয়ার্ড সম্মেলন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ইউনিট সম্মেলন নিয়ে একপক্ষ অভিযোগ করলে কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড সম্মেলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

নগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৬ সালে। সেই সম্মেলনে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সভাপতি এবং কাজী ইনামুল হক দানু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কাজী ইনামুল হক দানু মারা যান। এরপর ওই বছরের ১৪ নভেম্বর কেন্দ্র থেকে ৭১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি এবং আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর মারা যান এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। তখন থেকে নগর কমিটির একাংশের নেতারা কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের চেষ্টা করে আসছেন। সর্বশেষ ইউনিট সম্মেলনে প্রকাশ্যে বিরোধিতায় না থাকলেও ‘সুবিধাজনক’ সমর্থন ছিল গ্রুপটির। পরে ইউনিট কমিটিতে নিজেদের ঘরনার লোক না আসায় গোপন বৈঠক করে কেন্দ্রে অভিযোগ জানান।

বৈঠকের বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইউনিট কমিটি কীভাবে করা হয়েছে, সেটাতে যদি কোনো ভুলভ্রান্তি থাকে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সেটা নিজের মধ্যে সংশোধন করতে বলা হয়েছে। ইউনিট কমিটি শেষ হলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও তাদের সহযোগিতা নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি করব।

থানা কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের থানা কমিটিগুলো এত বেশি কার্যকর নয়। তাদের গতিশীল করতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বহু আগে একবার চিঠি দিয়েছিল। থানা কমিটিকে কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ১৫টি থানা থাকলেও আরও ৪টি থানা যুক্ত করা হবে। নগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব বসে থানা কমিটিগুলো গতিশীল করার জন্য একটি গাইডলাইন ও প্রতিটি থানার জন্য মনিটরিং সেল গঠন করা হবে।

 

এসকেএইচ//