• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম

দুদকের গোপন অনুসন্ধান

ফাঁসছেন কোটিপতি কর্মকর্তা-কর্মচারী

ফাঁসছেন কোটিপতি কর্মকর্তা-কর্মচারী
দুদকের লোগো

 

অধিদপ্তর-সংস্থা এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিরবে অনুসন্ধানে নেমেছিলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উৎকোচ দিয়ে পছন্দের ব্যাক্তিকে পোষ্টিং, একই অফিসে বছরের পর বছর, ৫ বছরেই কোটিপতি হওয়া, সরকারি নিয়ম-নীতি অমান্য করাসহ অসংখ্য অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে দুদকের অনুসন্ধানে। খোঁজ পাওয়া গেছে এসব প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবৈধ অর্থ আর অঢেল সম্পদের। 

দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

সূত্র জানায়, অধিদপ্তর, সংস্থা ও নাগরিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো প্রকার জানান না দিয়ে দুই বছর (২০১৭-২০১৯) আগে অনুসন্ধানে নেমেছিলো দুদক। এই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে সরকারি অধস্তন অন্তত: দশ প্রতিষ্ঠানের কোটিপতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম এবং অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি। দুর্নীতি আর অনিয়মের শ্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়া ৫ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন কেউ কেউ।

অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট দুদকের এক কর্মকর্তা দৈনিক জাগরণকে জানান, অনুসন্ধানে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাম এসেছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ভূমি অধিদপ্তরসহ ১০টি প্রতিষ্ঠানের। অন্য প্রতিষ্ঠানেগুলো হচ্ছে- রাজউক, পিডব্লিউডি, এলজিইডি, বিআরটিএ, বিআরটিসি, তিতাস গ্যাস ও ওয়াসা।

অনুসন্ধানের তথ্য অনুযায়ী এই ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যার অন্তত: ১০১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবৈধ পথে জিরো থেকে হিরো হয়েছেন খুব অল্প সময়ে। এদের তালিকা এবং এই অধিদপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে ২৪টি সুপারিশ সম্বলিত অনুসন্ধান রিপোর্ট বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় দুদক। এই দিনই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই অধিদপ্তরের ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে এদের বদলিকৃত স্থানে যোগ দিতে বলা হয়। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত বাকিদের বিরুদ্ধেও শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান এ বিষয়ে দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘আমরা প্রায় দু’বছর ধরে স্বাস্থ্য ও সেবা খাতসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে গোপনে অনুসন্ধান শুরু করেছিলাম। আমাদের অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা অধিদপ্তরসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কারা দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, তারা অবৈধ পথে কত অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন এবং কিভাবে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা যায়, সে বিষয়টি আমাদের অনুসন্ধানী রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এই রিপোর্ট বৃহস্পতিবার জমা দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য রিপোর্টগুলোও মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হবে।’

এমএম/বিএস