• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২২, ০৫:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৯, ২০২২, ০৫:৪১ পিএম

বাংলাদেশ সবসময় চায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ সবসময় চায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ সবসময় চায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক। যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত না, আমরা উন্নতি চাই। 

রবিবার (২৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতার শান্তি সেনানীরূপে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘ব্লু হেলমেট’ পরিবারের সদস্য হয়। আজ আমরা সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের ৩৪ বছর উদযাপন করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির ও শান্তির দূত। এ জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ তাকে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়— এই নীতি তিনি ঘোষণা করেছিলেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুপ্রতীম সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত সব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই দেশের আর্থসামাজিক উন্নতি করার দিকে মনোনিবেশ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে নানা অপশক্তিসমূহ নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে এই নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমাদের শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করে তুলছি।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিগত ৩৪ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিরক্ষী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। আজ সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বজনবিদিত।

সরকারপ্রধান বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ১২১টি দেশের ৭৫ হাজার ৫১৬ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮২৫ জন শান্তিরক্ষী রয়েছেন যা বিশ্বে নিয়োজিত সর্বমোট শান্তিরক্ষীর ৯ দশমিক দুই শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশের ৫১৯ জন নারী শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী তাদের নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে চলেছে। আমাদের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশে ৫৫টি মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ১৩টি মিশনে আমাদের শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছেন।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের ১৬১ জন শান্তিরক্ষী শহিদ হয়েছেন। এর মধ্যে গত এপ্রিল পর্যন্ত বিগত এক বছরে ২ জন শান্তিরক্ষী শহিদ হয়েছেন। আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাচ্ছি।

এ সময় বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী সব শান্তিরক্ষীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।