• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২, ১২:২৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৬, ২০২২, ১২:২৩ এএম

‘শরীরে ত কিছুই নাই! ওর আর কী পোস্টমর্টেম করবে’

‘শরীরে ত কিছুই নাই! ওর আর কী পোস্টমর্টেম করবে’
সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২১ জনের লাশ।

নিহত ফারুকের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে যাওয়ার আকুতিতে তার বাবা সাত্তার বলেন, আমারতো সব শেষ। আমার ছেলেটা কাজ করতে গিয়ে মরে গেল। এখন তার লাশটা নিয়ে যেতে চাইছি। ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ নেয়া যাচ্ছে না। ওর আর কী পোস্টমর্টেম করবে! শরীরে তো কিছুই নাই!

ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। 

 

দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে প্রায় ২০০ মানুষ। মৃতের স্বজনরা মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে যেতে আকুতি জানিয়ে দৌঁড়ঝাঁপ করছেন।

রোববার (৫ জুন) সন্ধ্যায় ৪৯ জন মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী। আহত অনেকের অবস্থা গুরুতর, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমের প্রধান আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, সেনাবাহিনীর প্রায় ২০০ জনবল এখানে কাজ করছে।

ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় পরিচয় শনাক্ত হওয়া নিহত ২১ জন হলেন— বাঁশখালী উপজেলার ফরিদুল আলমের ছেলে মুমিনুল হক (২৪), মাহমুদুর রহমানের ছেলে মহিউদ্দিন (৩৪), দক্ষিণ বালিয়াপাড়ার সিহাব উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৩), চালিয়াপাড়ার আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল আলম (১৯), হাসান আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ (২৩), আব্দুল রশিদের ছেলে আলাউদ্দিন (৩৫), নিজাম উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন (৩৫), নিজাম উদ্দিনের ছেলে সুমন (২৪), আবুল কাশেমের ছেলে ইব্রাহিম (২৭), মো. আসিফের ছেলে নয়ন (২২), দক্ষিণ হালিশহর এলাকার আব্দুল ছবুরের ছেলে হারুনুর রশিদ (৩৫), সামসুল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান (৩২), সাত্তারের ছেলে ফারুক জমাদার (৫৫), আমিন উল্লাহ’র ছেলে শাহাদাত উল্লাহ (৩০), শাহ আলমের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৯), সোহরাব মিয়ার ছেলে তৌহিদুল হাসান (৪১), জাফর আহমদের ছেলে রিদুয়ান (২৪), আব্দুল সত্তার তরফদারের ছেলে শাকিল তরফদার (২২) চিত্তরঞ্জন চাকমার ছেলে নিপন চাকমা (৪৫), কামরুল মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (২২), সোলাইমান মিয়ার ছেলে আফজাল (২০) ও আবু ইউসুফের ছেলে সালাউদ্দিন কাদের (৫০)।

বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম। শনাক্তকৃতরা হলেন- কুমিরা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মো. রানা মিয়া, নার্সিং এটেনডেন্ট মনিরুজ্জামান, ফায়ার ফাইটার আলাউদ্দিন, ফায়ার ফাইটার শাকিল তরফদার, লিডার মিঠু দেওয়ান, সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ফায়ার ফাইটার রমজানুল ইসলাম, লিডার নিপন চাকমা।

পরিচয় শনাক্ত না হওয়া মরদেহ গুলোর ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চকবাজার জোনের সহকারী (এসি) কমিশনার শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, পাঁচলাইশ থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) মর্গে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে মরদেহ শনাক্তের জন্য ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। যাদের স্বজন নিখোঁজ রয়েছেন তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

জাগরণ/দুর্ঘটনা/এসএসকে/এমএ