• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২, ১২:১৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৩, ২০২২, ১২:১৭ এএম

পদ্মা সেতু বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি

পদ্মা সেতু বদলে দেবে  দেশের অর্থনীতি
সংগৃহীত ছবি

পদ্মা বহুমুখী সেতু শুধু বাংলাদেশের দুই প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগের বাধাই দূর করবে না, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দ্বারও উন্মোচন করবে। 

ওপারের পণ্য আসবে রাজধানীসহ সারাদেশে। এপারের পণ্যও সহজেই পৌঁছাবে ওপারের ২২ জেলায়। বাড়বে মোট দেশজ উৎপাদন। 

এরই মধ্যে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দু'পারে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেড়েছে জমির দাম। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও বেড়ে যাবার কথাই বলছেন সেখানকার মানুষরা। 

পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ায় কোন জেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে যাচ্ছে? পদ্মার ওপারে  ২২ জেলার মানুষের গন্তব্যটা সহজ হবে এটা সবার জানা। 

কিন্তু এপারের মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দাদের লাভটা কি, তারা বলছেন অর্থনৈতিক লাভ অনেক। পদ্মা সেতুর জন্য নির্মিত এক্সপ্রেসওয়েই বদলে দিচ্ছে জেলার ভূ-অর্থনীতি। 

সেখানকার মানুষেরা জানান, দুর্বল ও অপরিণত মাটির কারণে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের শিকার পদ্মাপারের মানুষ। পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

এখন পদ্মা সেতু বহুমুখী প্রকল্পের নদীশাসনের কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকায় প্রায় ১৪ কিলোমিটার নদী শাসন করতে হচ্ছে। 

এর মধ্যে মাওয়া এলাকায় ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং বাকি ১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জাজিরা এলাকায়। 

নদীশাসন কাজ শুধু সেতু রক্ষা করেনি, পাশাপাশি হাজারো মানুষের বাপ-দাদার ভিটাও রক্ষা করেছে। একটা স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে।

স্থায়ী ব্যবস্থা হওয়ায় এখন ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় এ অঞ্চলের জনপদ নেই। এক সময় ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন পদ্মাপারের মানুষ। এখন কেটেছে সেই কালো মেঘ।

ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এগুলেই দেখা যাবে দুই পাড়ে ফসলের মাঠে দাঁড়িয়ে আছে  বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানির সাইনবোর্ড। 

ঢাকা-মাওয়া সংযোগ সড়কগুলোতে রোজই বাড়ছে জমির দাম। এখন শহরের মতো দামে বিক্রি হচ্ছে সেখানকার জমি। 

জমির মূল্য কোনও কোনও ক্ষেত্রে ত্রিশগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। বেড়েছে জমির বিক্রিও। শ্রীনগর উপজেলার সাব-রেজিস্টার অফিসে উপচে পড়া ভিড়। সবাই সেখানকার জমির ক্রেতা।    

শুধু যে জমির দাম কয়েকগুণ বেড়েছে তা নয়, এপারের আড়িয়াল বিলের দেশি প্রজাতির মাছ, আলু ও অন্যান্য সবজি সহজেই যেতে পারবে ওপারের ২২ জেলায়।  

পদ্মাপারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও চাষিরাও অনেক লাভবান হবেন। ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার ফলে অর্থনীতির চাকাও সচল হবে। 

সাধারণ মানুষ কৃষিপণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করবেন। পদ্মাপারে নানা ধরনের শাক-সবজি হয়। 

এসব শাক-সবজি ঢাকায় নিতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগতো। অথচ এখন স্বল্প সময়ে ঢাকায় নেওয়া যাবে। ফলে সবাই উচ্ছ্বসিত সেতুর উদ্বোধনে।

আরিচা ও মাওয়া ঘাটের কারণে পণ্য পরিবহনের সংকটও দূর হচ্ছে। ট্রাক চালকরা জানান, ঘাটে চাঁদাবাজি ছাড়াও পারাপারে যে সময় লাগতো, সেটি এখন আর লাগবে না। 

পদ্মা সেতুর কারণে শ্রীনগর ও লৌহজং শিল্প কারখানাও হচ্ছে। গড়ে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র। আর এভাবেই বদলে যাচ্ছে পদ্মার দুই পারের দৃশ্যপট। 

জাগরণ/যোগাযোগ/পদ্মাসেতু/এসএসএকে