
রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বয়ে যাচ্ছে তাপদাহ। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে জনজীবন। এ পরিস্থিতির মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে পরিস্কার হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ঘণ্টায় প্রায় ৯৩ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে বলে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের (আইএমডি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আগামী দু’দিনের মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়াসহ দেশে বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আইএমডি আজ ঘূর্ণিঝড়ের একটি সম্ভাব্য গতিপথ (ট্র্যাক চিত্র) প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের ওপর অবস্থিত নিম্নচাপটি আগামী রোববার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর ধীরে ধীরে উত্তর দিকে ফিরে আসতে পারে এবং ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
আগামী সোমবার (২৪ অক্টোবর) এটি পশ্চিম, মধ্য ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের ওপরে অবস্থান করবে। সর্বশেষ মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় অঞ্চলের কাছে আঘাত হানতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে এবং আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। লঘুচাপের জন্য চট্টগ্রাম, কপবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে পরবর্তী নির্দেশনা সাবধানতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
জাপানের হিমাওয়ারি স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যালোচনা করে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের লঘুচাপটি গত চব্বিশ ঘণ্টায় শক্তিশালী হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি আগামী সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। নিম্নচাপের প্রভাবে ২৩ অক্টোবর (রোববার) থেকে বৃষ্টি শুরু হবে, যা বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ২৩ অক্টোবর (রোববার) থেকে সাগর অত্যন্ত উত্তাল হবে। তাই জেলেদের ওইদিন সকালের মধ্যে তীরে ফিরে আসার পরামর্শ দেন মোস্তফা কামাল পলাশ।
এ গবেষক বলেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের পুরোটা খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সব উপকূলীয় জেলা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালীর ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানার প্রবল আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার মিলিত প্রভাবে সোম ও মঙ্গলবার খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
জাগরণ/পরিবেশ/এমএ